তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাথাব্যথাও বাড়ে। গরমকাল শুধু রৌদ্রোজ্জ্বল দিন আর রং-বেরঙের ফলমূলই নিয়ে আসে না, সেইসঙ্গে অতিরিক্ত তাপ, ঘাম এবং পানিশূন্যতার অস্বস্তিও নিয়ে আসে। অনেকের ক্ষেত্রে এই তীব্র গরমে ঘন ঘন মাথাব্যথা দেখা দেয়। যা দীর্ঘস্থায়ী হয় এবং দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। মাথাব্যথার কারণে অলস এবং ক্লান্ত বোধ হতে থাকে।
কিন্তু গরমকালে এত ঘন ঘন মাথাব্যথা কেন হয়? গরম আবহাওয়ায় কেন মাথাব্যথা ঘন ঘন হয় এবং কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় তা জানা জরুরি। গরমের মাসগুলোতে যখন বাইরে তাপমাত্রা বাড়ে তখন মাথাব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। ফ্রিকোয়েন্সি এবং তীব্রতা উভয়ই স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বাড়তে পারে।
গবেষণা দেখা গেছে যে, মাথাব্যথা শুরু হতে গরম রোদে ১০ মিনিটের মতো সময় লাগতে পারে।সূর্য আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের বর্ণালী নির্গত করে, যার মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হলো উচ্চ শক্তির দৃশ্যমান নীল আলো। প্রকৃতপক্ষে নীল আলো সর্বত্র রয়েছে। ফ্লুরোসেন্ট, ডিভাইস, স্ক্রিন এবং আলোর অন্যান্য কৃত্রিম উৎসেও এটি পাওয়া যায়। এই নীল আলোকে মাইগ্রেনে আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য আলোর সবচেয়ে বেদনাদায়ক রঙ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। সূর্যালোক এবং তাপের সঙ্গে এই আলোক তরঙ্গের সম্মিলিত প্রভাব এসময় মাথাব্যথার জন্য দায়ী হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, মাথাব্যথা হয় পানিশূন্যতা, পরিবেশ দূষণ, তাপ ক্লান্তি এবং হিট স্ট্রোকের মতো অন্তর্নিহিত কারণে। তাপের মাথাব্যথা আধা ঘণ্টা থেকে কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে এবং যদি শুরুতে চিকিৎসা করা হয় তবে ব্যথা কিছুটা কম হতে পারে। জেনে নিন গরমে মাথাব্যথার কারণগুলো-
পানিশূন্যতা
ডিহাইড্রেশন মাথাব্যথার জন্য সবচেয়ে বড় কারণ হতে পারে। তাপ সরাসরি মাথাব্যথার কারণ হয় না তবে পানিশূন্যতাই এর প্রধান কারণ। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ঘাম বৃদ্ধি পায়, যা শরীর থেকে তরল এবং ইলেক্ট্রোলাইটের উল্লেখযোগ্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। যখন শরীর ডিহাইড্রেটেড হয়, তখন মস্তিষ্ক অস্থায়ীভাবে তরল হ্রাস থেকে সঙ্কুচিত হতে পারে, যার ফলে মাথাব্যথা শুরু হয়। আপনার মাথাব্যথা হলে এক গ্লাস পানি পান করুন এবং সেই মাথাব্যথা দূর করতে সূর্যের সংস্পর্শে নিজেকে হাইড্রেট করতে থাকুন।
রোদ
সরাসরি সূর্যের আলোতে দীর্ঘ সময় থাকলে তাপ জমার কারণে মাথাব্যথা হতে পারে। তীব্র আলোও চোখকে চাপ দিতে পারে, এটি মাথাব্যথা বাড়িয়ে দেয়। মাইগ্রেনের রোগীর ক্ষেত্রে আলো এবং শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা এবং মাথা ঘোরার মতো সমস্যা হতে পারে। সান প্রোটেক্টেড পোলারয়েড গ্লাস পরে রোদে গেলে এই সমস্যা এড়ানো সম্ভব হতে পারে।
শারীরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি
শীতের দিনগুলোতে আমরা সবাই কিছুটা অলস হয়ে যাই। গরমের সময় এলে সবাই গা-ঝাড়া দিয়ে উঠি যেন। এসময় বাইরে বেশি যাওয়া হয়। এছাড়া হাঁটা, দৌঁড়, ব্যায়ামের মতো কার্যকলাপও বেশি হয়। যদিও সক্রিয় থাকা উপকারী তবে অত্যধিক শারীরিক পরিশ্রম, বিশেষ করে উচ্চ তাপে, ডিহাইড্রেশন এবং অতিরিক্ত গরমের কারণ হতে পারে। এর ফলে মাথাব্যথা আরও বেড়ে যায়।