তুরস্কের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্ক কেমন হবে?

সরোয়ার আলম, তুরস্ক থেকে

তুরস্ক কাবুল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়ার আগ্রহ প্রকাশের পরে সবার মধ্যে যে উৎকণ্ঠা ছিল, তা কিছুটা হলেও প্রশমিত হয়েছে। কাবুলের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ শান্তিপূর্ণভাবে তালেবানের হাতে যাওয়া এবং সেখানকার বেশিরভাগ পশ্চিমা দূতাবাস খালি করায় এই বিমানবন্দরের নিরাপত্তা এখন অনেকটা গুরুত্ব হারিয়েছে।

যদিও আমি সেই শুরু থেকেই বলে এসেছি যে, তুরস্ক তালেবানের সঙ্গে কোনো চুক্তি না করে ওখানে থাকবে না। এখনও বলছি, তুরস্ক এর পরেও কাবুল বিমানবন্দরে থাকতে পারে তবে সেটা হবে তালেবানের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমেই। এখানে তালেবান-তুরস্কের মারামারি দেখার জন্য যারা মুখিয়ে ছিলেন তাদের কিছুটা হতাশ হতে হবে বৈ কি।

আমি যতই বলি যে, তালেবান-তুরস্ক মারামারির সম্ভাবনা নেই, কিন্তু কে শোনে কার কথা। তুরস্ক ন্যাটোর সদস্য হতে পারে। কিন্তু তুরস্কের নিজস্ব কিছু প্লান বা পরিকল্পনা সবসময় থাকবে।
যেমন, তালেবানের কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরেও যে দেশগুলো তাদের দূতাবাস খোলা রাখার ঘোষণা দিয়েছে, তাদের মধ্যে অন্যতম একটি হলো তুরস্ক।

তুরস্কের সেনাবাহিনী এখনও কাবুল বিমানবন্দরে আছে। এখনও পর্যন্ত তাদের ওপর কোনও চাপ নেই। এবং তাদের দেশ ত্যাগের কথাও বলছে না কেউ।

তুরস্ক কাবুলে সেনা রাখার এখন তেমন কোনও গুরুত্ব নেই ঠিকই। তবে কাবুল বিমানবন্দরের সুষ্ঠু পরিচালনার জন্য টেকনিক্যাল এবং অ্যাডভাইজোরি সাপোর্ট দিতে তুরস্কের সেনাবাহিনীর একটা টেকনিক্যাল টিম সেখানে থাকতে পারে। বিমানবন্দর পরিচালনার প্রযুক্তিগত সব দায়িত্ব থাকতে পারে তুরস্কের কাছে। কিন্তু সেখানে শর্ত হবে তুরস্কের এই অবস্থান কোনোভাবেই তালেবানের ওপর কোনো ধরনের হুমকির সৃষ্টি করবে না।

তালেবান অবশ্য চাইবে, এখন তুরস্ক তালেবানের সঙ্গে রাষ্ট্রীয়ভাবেই যোগাযোগ করুক। তুরস্ক যেন তালেবান সরকারকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমর্থন আদায়ে সহযোগিতা করুক। তুরস্ক সেক্ষেত্রে কাতারে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে একই সারিতে থাকবে।

তালেবানের এই দ্রুত ক্ষমতা গ্রহণ তুরস্ক আঁচ করতে পেরেছিল ঠিকই। গত সপ্তাহে তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পাকিস্তান সফর করেন। সেখানে তাকে তালেবানের দ্রুত ক্ষমতা দখলের বিষয়ে ব্রিফিং দেয়া হয়।
প্রায় একই সময়ে তুরস্কের রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান ঘোষণা দেন, তুরস্ক তালেবানের সঙ্গে বৈঠক করছে। তিনিও তালেবানের নেতার সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন বলে জানান। এরপরে আবার গত কাল তিনি

আফগানিস্তানের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে একত্রে কাজ করারও ঘোষণা দেন।

তুরস্কের সঙ্গে তালেবানের এখন নতুন সম্পর্ক কেমন হবে, কোন কোন শর্তে চুক্তি হবে এখন সব কিছু ধারণা করা কঠিন। তবে তুরস্কে থাকা আফগান শরণার্থীদের ফেরত নেয়ার বিষয়টি সবার আগে সামনে আসবে।

আফগানিস্তানে এখন ২৪ ঘণ্টা অনেক লম্বা একটা সময়। ২৪ বছরেও যে ঘটনা বা পরিবর্তন হওয়া প্রায় অসম্ভব ছিল সেগুলো ওখানে ঘটছে গত ২৪ ঘণ্টায়। তাই এই মুহূর্তে সবকিছু আঁচ করা কঠিন। তবে তুরস্কের সঙ্গে তালেবানের সম্পর্কের যে উত্তেজনা তৈরি করা হয়েছিল বিভিন্ন সার্কেল থেকে, সেটা কিছুটা হলেও প্রশমিত হল।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

জাতিসংঘে নিযুক্ত ১২ রুশ কূটনীতিককে বহিষ্কার করেছে যুক্তরাষ্ট্র

নূর নিউজ

ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ কাশানির মৃত্যু

নূর নিউজ

উত্তেজনার মধ্যে ইউক্রেন সফরে যাচ্ছেন এরদোগান

নূর নিউজ