মহানবী সাঃ-কে নিয়ে বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তিনি বলেছেন, মোদি সরকারের শাসনামলে ভারতে মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ব্যাপক হারে খর্ব হচ্ছে, এর বিরুদ্ধে এখনি মুসলিম বিশ্বের পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
নবীজি সা: কে নিয়ে বিজেপি নেত্রীর মন্তব্যে প্রেক্ষিতে রোববার পাকিস্তানের সংবাদ মাধ্যম এক্সপ্রেস নিউজ ও জিও নিউজের এক প্রতিবেদনে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর এই প্রতিক্রিয়ার কথা উঠে এসেছে।
মহানবী সাঃ-কে নিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার করা বিতর্কিত মন্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শাহবাজ শরিফ বলেছেন, বিজেপি নেত্রীর এই মন্তব্যে তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। তার এমন বেয়াদবি মূলক মন্তব্য আমাদের হৃদয়কে ক্ষত-বিক্ষত করেছে।
তিনি আরো বলেছেন, আমি বারবার বলেছি মোদি সরকার দেশটির মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করেছে এবং প্রতিনিয়ত ভারতে মুসলমানরা প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন। এমন কর্মকাণ্ডের জন্য ভারতকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।
শাহবাজ শরিফ স্পষ্ট করে করে বলেন, আমরা আমাদের প্রিয় নবী সাঃ-কে পৃথিবীর সবকিছুর থেকে বেশি ভালোবাসি এবং সবকিছুর ওপর তার ভালোবাসাকে প্রাধান্য দেই। নবী সাঃ-র ভালোবাসা ও তাঁর অবমাননায় মুসলমানেরা নিজের জীবন বিলিয়ে দিতেও প্রস্তুত।
এদিকে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, সম্প্রতি একটি সংবাদমাধ্যমের আলোচনা সভায় গিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মা। এ নিয়ে নূপুরের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। তা নিয়ে প্রতিবাদের মুখে রোববার দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিংহের স্বাক্ষর করা বিবৃতি প্রকাশ করেছে বিজেপি। তাতে লেখা হয়, ‘বিজেপি কোনও ধর্মেরই বিরুদ্ধে নয়। কোনও ধর্ম বা সম্প্রদায়কে অবমাননা করার আদর্শে বিশ্বাস করে না বিজেপি। এই ধরনের দর্শন বিজেপি প্রচারও করে না।’ ভারতীয় সংবিধান যে প্রত্যেক নাগরিককেই নিজের ধর্ম পালনের অধিকার দিয়েছে, তাও উল্লেখ করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।
এরপরেই নূপুরকে চিঠি পাঠায় দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি। চিঠিতে বলা হয়, দলীয় সংবিধানের ১০ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছেন নূপুর। তাই তাকে দল থেকে বরখাস্ত করা হচ্ছে। নূপুর ছাড়াও দিল্লি বিজেপির মিডিয়া ইন-চার্জ নবীন কুমার জিন্দলকেও বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিজেপি মুখপাত্রের মন্তব্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার জুমার পরে বিক্ষোভ করেছেন উত্তরপ্রদেশের কানপুরের মুসলমানরা। বিক্ষোভ থেকে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় ৮০০ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকদের বিরুদ্ধে জাতীয় সুরক্ষা আইনের ধারায় মামলা করা হয়েছে। সূত্র : এক্সপ্রেস নিউজ, জিও নিউজ, আনন্দবাজার