নামাজের গুরুত্বপূর্ণ ফরজ হলো সিজদা। নামাজের প্রত্যেক রাকাতে দুইটি করে সিজদা দিতে হয়। সিজদা নামাজের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে পালন করা হলেও এর বিশেষ ফজিলত রয়েছে এবং এর মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ হয়।
সিজদার ফজিলত সম্পর্কে এক হাদিসে মাদান ইবনে আবু তালহা আল ইয়ামিরী বলেন, আমি রাসূল সা.-এর আজাদকৃত গোলাম সাওবান রা.-এর সঙ্গে সাক্ষাত করলাম। আমি বললাম, আমাকে এমন একটি কাজের কথা বলে দিন যা করলে আল্লাহ আমাকে বেহেশতে প্রবেশ করাবেন।
আমি জানতে চাওয়ার পর তিনি চুপ থাকলেন। আমি আবার তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি এবারও নিরব থাকলেন। তৃতীয়বার আমি তাকে জিজ্ঞেস করার পর তিনি বললেন, তুমি আল্লাহর জন্য অবশ্যই বেশি বেশি সিজদা করবে। কারণ, তুমি যখনই আল্লাহর জন্য সিজদা করবে, আল্লাহ তার বিনিময়ে তোমার মর্যাদা একধাপ বৃদ্ধি করে দেবেন এবং তোমার একটি গুনাহ মাফ করে দেবেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯৮৬)
অপর এক হাদিসে রবীআ ইবনে কাবা আল-আসলামী রা. বলেন, আমি রাসূল সা.-এর সঙ্গে রাতে ছিলাম। আমি তাঁর অজুর পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস এনে দিতাম। তিনি বললেন, কিছু চাও। আমি বললাম, বেহেশতে আপনার সাহচার্য প্রার্থনা করছি। তিনি বললেন, এছাড়া আরও কিছু কি চাইবে? আমি বললাম, এটাই আমার আবেদন। তিনি বললেন, তাহলে তুমি অধিক পরিমাণে সিজদা করে তোমার নিজের স্বার্থেই আমাকে সাহায্য করো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ৯৮৭)
আরেক হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য একটি সিজদা করে, আল্লাহ তার জন্য একটি নেকী লেখেন ও তার একটি পাপ দূর করে দেন এবং তার মর্যাদার স্তর একটি বৃদ্ধি করে দেন। অতএব তোমরা বেশি বেশি সিজদা কর’। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৪২৪)
আরেক হাদিসে রাসূল সা. বলেছেন, কিয়ামতের দিন তিনি ঈমানদারদেরকে চিনবেন তাদের সিজদার স্থান ও অজুর অঙ্গ সমূহের ঔজ্জ্বল্য দেখে। (মুসনাদে আহমাদ , হাদিস : ১৭৭২৯)
হাদিসে আরও বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ জাহান্নামবাসীদের মধ্য থেকে কিছু লোকের উপরে অনুগ্রহ করবেন এবং ফেরেশতাদের বলবেন, যাও ওইসব লোকদের বের করে নিয়ে এসো, যারা আল্লাহর ইবাদত করেছে। অতঃপর ফেরেশতারা তাদের সিজদার চিহ্ন দেখে চিনে নিবেন ও বের করে আনবেন। বনী আদমের পুরো শরীর আগুনে খেয়ে নিবে, সিজদার চিহ্ন ছাড়া। কারণ, আল্লাহ পাক জাহান্নামের উপরে হারাম করেছেন সিজদার চিহ্ন খেয়ে ফেলতে’। (মিশকাত, হাদিস : ৫৫৮১ )