গাজীপুর প্রতিনিধি: কারখানার অভ্যন্তরে নামাজ পড়া এবং টুপি ও পাঞ্জাবি পরা যাবে না বলে নোটিশ দেয়ার পর তা প্রত্যাহার করে নিয়েছে গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর এসঅ্যান্ডপি বাংলা লিমিটেড কারখানা কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে, ধর্মীয় অনভূতিতে অনিচ্ছাকৃত আঘাত করার জন্য দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা চেয়েছেন তারা।
টঙ্গীর সাতাইস দাড়াইল এলাকায় অবস্থিত এসঅ্যান্ডপি বাংলা লিমিটেড নামের ওই কারখানাটি। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্বাক্ষরিত এক নোটিশে বলা হয়, এতদ্বারা অত্র কারখানার সকল শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আমাদের ফ্যাক্টরির অভ্যন্তরে নামাজ পড়া যাবে না এবং ফ্যাক্টরিতে পাঞ্জাবি ও টুপি পরা যাবে না। এই আদেশ মেনে ফ্যাক্টরির ভেতরে কাজ করার জন্য বিশেষভাবে নির্দেশ করা যাচ্ছে।
কারখানার দেয়া এ নোটিশ মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। এতে ফেসবুক ব্যবহারকারীরা নেতিবাচক মন্তব্য করা শুরু করেন। পরে বুধবার (৪ আগস্ট) নোটিশটি প্রত্যাহার করে নেয়া হয়।
প্রত্যাহার করা নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে, কারখানার অভ্যন্তরে নামাজ পড়া এবং পাঞ্জাবি ও টুপি পরা থেকে বিরত থাকার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান অনিচ্ছাকৃত ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। যার জন্য আমি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক) আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি।
এতে আর বলা হয়, ‘আমার ফ্যাক্টরিতে কর্মকর্তা, কর্মচারীরা পূর্বের ন্যায় যার যার ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী পোশাক-পরিচ্ছেদ পরিধানসহ স্বাধীনভাবে ইবাদত বন্দেগি করতে পারিবেন। উল্লেখ্য যে, অত্র ফ্যাক্টরির পঞ্চমতলার দক্ষিণ পার্শ্বে অজু করার ব্যবস্থাসহ নামাজের জন্য নির্ধারিত স্থান রয়েছে। ৯২% মুসলিম জনগোষ্ঠীর দেশ হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে অনিচ্ছাকৃত আঘাতের জন্য আমি বিনীতভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
কারখানার প্রত্যাহার করা নোটিশে দেয়া মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে কারখানাটির মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মো. মাহবুব আলম বলেন, কোরিয়ান নাগরিকদের মালিকানাধীন কারখানাটি দীর্ঘদিন ধরে গার্মেন্টস পণ্য উৎপাদন করে যাচ্ছে। সম্প্রতি মালিকপক্ষ কারখানায় নামাজ পড়া এবং টুপি ও পাঞ্জাবি না পরতে একটি নির্দেশনা দেন। এটা মূলত কোরিয়ান মালিকপক্ষের ভাষাগত ভুল ছিল। যা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি শুরু হয়েছে। পরে তা অপর একটি চিঠির মাধ্যমে কারখানার মালিকপক্ষের আদেশটি প্রত্যাহারও করে নেন। প্রত্যাহারকৃত নোটিশটি বুধবার জারি করা হয়েছে।