নামাজ যেভাবে গুনাহ মুক্ত করে

নামাজ ইসলামে পঞ্চস্তম্ভের একটি। ঈমানের পরই নামাজের অবস্থান। প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পর থেকে মৃত্যু অবধি নামাজ আদায় ফরজ। কোরআন, হাদিস, ইজমা, কিয়াসের ভিত্তিতে নামাজ ফরজ হওয়ার বিষয়টি প্রতিষ্ঠিত ও প্রমাণিত।

আল্লাহ তায়ালা বলেন,

وَ مَاۤ اُمِرُوۡۤا اِلَّا لِیَعۡبُدُوا اللّٰهَ مُخۡلِصِیۡنَ لَهُ الدِّیۡنَ ۬ۙ حُنَفَآءَ وَ یُقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ یُؤۡتُوا الزَّکٰوۃَ وَ ذٰلِکَ دِیۡنُ الۡقَیِّمَۃِ ؕ

তাদেরকে এ ছাড়া অন্য কোন হুকুমই দেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহর ‘ইবাদত করবে খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে তার আনুগত্যের মাধ্যমে। আর তারা নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে আর জাকাত দিবে। আর এটাই সঠিক সুদৃঢ় দ্বীন। (সূরা আল-বায়্যিনাহ, (৯৮), আয়াত, ০৫)

অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন,

فَاَقِیۡمُوا الصَّلٰوۃَ وَ اٰتُوا الزَّکٰوۃَ وَ اعۡتَصِمُوۡا بِاللّٰهِ ؕ هُوَ مَوۡلٰىکُمۡ ۚ فَنِعۡمَ الۡمَوۡلٰی وَ نِعۡمَ النَّصِیۡرُ

কাজেই তোমরা নামাজ কায়েম কর, জাকাত দাও, এবং আল্লাহকে আঁকড়ে ধর। তিনিই তোমাদের অভিভাবক, তিনি কতই না উত্তম অভিভাবক আর কতই না উত্তম সাহায্যকারী! (সূরা হজ, (২২), আয়াত, ৭৮)

বিখ্যাত সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (সাহাবিদের উদ্দেশে) বললেন, আচ্ছা বলো তো, তোমাদের কারো বাড়ির দরজার কাছে যদি একটি নদী থাকে, এবং সে সেই নদীতে দিনে পাঁচবার গোসল করে তাহলে কি তার শরীরে কোনো ময়লা থাকতে পারে? সাহাবিরা উত্তরে বললেন, না, কোনো ময়লা থাকবে না। তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হলো এমন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানুষকে এভাবে গুনাহমুক্ত করে। (বুখারি ও মুসলিম)

আরেক হাদিসে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম, কোন কাজ (আমল) আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়? তিনি ( রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, সময়মতো নামাজ আদায় করা। আমি বললাম, এরপর কোন কাজ? তিনি বললেন, মা-বাবার সাথে সদ্ব্যবহার করা। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোন কাজ? তিনি বললেন, আল্লাহর পথে জিহাদ করা।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আমি আরও কিছু জিজ্ঞেস করলে তিনি (রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) আমাকে আরও বলতেন। (বুখারি ও মুসলিম)

অপর এক হাদিসে হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন—পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অন্য জুমা পর্যন্ত এবং এক রমজানের রোজা থেকে অপর রমজানের রোজার কাফফরা হয়। যদি মধ্যবর্তী সময়ে কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা হয়। (মিশকাত, হাদিস, ৫৬৪)

নামাজ শুধু উম্মতে মুহাম্মাদীর ওপর ফরজ করা হয়নি। পূর্ববর্তী সব আসমানী ধর্মের অনুসারীর ওপর ফরজ করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা হজরত আদম, ইদরীস, নূহ, ইব্রাহিম, ইসমাঈল, ইসহাক, ও ইয়াকুব (আ.)-সহ বিভিন্ন নবী রাসূলের কথা উল্লেখ করে বলেছেন,

فَخَلَفَ مِنۡۢ بَعۡدِهِمۡ خَلۡفٌ اَضَاعُوا الصَّلٰوۃَ وَ اتَّبَعُوا الشَّهَوٰتِ فَسَوۡفَ یَلۡقَوۡنَ غَیًّا

তাদের পরে আসল এমন এক অসৎ বংশধর যারা সালাত বিনষ্ট করল এবং কুপ্রবৃত্তির অনুসরণ করল। সুতরাং শীঘ্রই তারা জাহান্নামের শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে। (সূরা মারইয়াম, (১৯), আয়াত, ৫৯)

বর্তমানে নামাজের প্রতি সবথেকে বেশি অবহেলা দেখিয়ে থাকে মানুষজন। অথচ মুসলিম ও অমুসলিমের মাঝে পার্থক্যের অন্যতম মাধ্যম হলো নামাজ। তাই প্রতিদিনের সময় থেকে অল্প কিছু সময় নামাজের দেওয়া জরুরি।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

পীরজঙ্গী মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ছফিউল্লাহ আর নেই

আনসারুল হক

কোন সদকার সওয়াব বেশি?

নূর নিউজ

মহানবী সা. দুঃখ পেলে যেভাবে প্রকাশ করতেন

নূর নিউজ