বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত শপথ নিলেন ‘গিয়াস-তারেক’ নেতৃত্বাধীন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশি বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) নিউইয়র্ক-এর নতুন কমিটি।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ওয়ার্ল্ড ফেয়ার মেরিনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র এরিক অ্যাডাম।
উল্লেখ্য, মেয়র হিসেবে শপথ নেয়ার পর বাংলাদেশি এমনকি সাউথ এশিয়ান কমিউনিটির কোন অনুষ্ঠানে এরিক অ্যাডামস-এর এটিই প্রথম কোন অনুষ্ঠানে যোগদান। নতুন মেয়রকে পেয়ে আনন্দে উৎফুল্ল জেবিবিএ’র কর্মকর্তারা সহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, “আমি আপনাদের, আপনারাও আমার। আপনারা আমাকে মনে রাখবেন, আমিও আপনাদের মনে রাখবো। আপনারা আমার জন্য কাজ করবেন, পাশে থাকবেন, আমিও আপনাদের জন্য কাজ করবো, পাশেও থাকবো।”
সর্বস্তরের তিন শতাধিক অতিথির উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতেই পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মওলানা আবুল কালাম। এরপর অভিষেক অনুষ্ঠান আয়োজক ও বিদায়ী কমিটির পক্ষ থেকে বিদায়ী সভাপতি ও আহ্বায়ক শাহ নেওয়াজ, সদস্য সচিব আসিফ বারী টুটুল ও বিদায়ী ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এস এম আবুল হাসান শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।
পরবর্তীতে নতুন কমিটির কর্মকর্তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান জেবিবিএ’র ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ এ বারো ভূঁইয়া। এসময় কমিশনের সদস্য বেলায়েত হোসেন ও জাফর মিতা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে নিউইয়র্ক ষ্টেট অ্যাসেম্বলীওম্যান জেনিফার রাজকুমার, কমিউনিটি অ্যাক্টিভিষ্ট ডা. মাসুদুর রহমান, নিউইয়র্ক থেকে ইউএস কংগ্রেস সদস্য পদপ্রার্থী ডা. হক প্রমুখ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক ষ্টেট সিনেটর জন ল্যু, সাবেক কাউন্সিলম্যান হাইরাম মানসেরাত সহ মূলধারার রাজনীতিক ও কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভাপতি গিয়াস আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক তারেক হাসান খান শপথ নেয়ার পর তাদের শুভেচ্ছা বক্তব্যে ঐক্যবদ্ধভাবে জেবিবিএ-কে শক্তিশালী করার পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার অঙ্গীকার পুন:ব্যক্ত করেন এবং সবার সহযোগিতা কামনা করেন।
তারা মেয়র এরিক অ্যাডমসকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, আমাদের আহ্বানে মেয়র অ্যাডমস এসেছেন আমরা স্বার্থক, সফল।
সবশেষে ছিল মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে প্রবাসের জনপ্রিয় শিল্পী শাহ মাহবুব, রানু নেওয়াজ, মোস্তফা অনিক রাজ, শশী প্রমুখ সঙ্গীত পরিবশেন করেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন আশরাফুল হাসান বুলবুল ও শামসুন্নাহার নিম্মি।
উল্লেখ্য, মেয়র এরিক অ্যাডামস তার বক্তব্য শেষ হওয়ার পর পরই মেয়রের পিছনে মঞ্চে অবস্থানকারী এক বাংলাদেশি সংক্ষেপে ওজনপার্কে বাংলাদেশি খন্দকার মোদাচ্ছের হত্যার ঘটনা তুলে ধরেন এবং কেন হত্যাকান্ডটি ঘটলো এমন প্রশ্ন করে মেয়রের দৃষ্টি আকর্ষন করলে মেয়র অ্যাডম মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে বলেন, শুধু বাংলাদেশিই নন, এই শহরে কালো, স্প্যানিশ সহ অন্যান্য কমিউনিটির লোক মারা যাচ্ছে। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে সিটির আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে কাজ করছি। আর আমাকে কেউ ডাকলে পাবেন, না ডাকলে কি করে পাবেন। আমি আপনাদের পাশে আছি, আপনারাও আমার পাশে থাকুন। এসময় মেয়রকে কিছুটা ক্ষুদ্ধ দেখাচ্ছিলো।
মেয়র এরিক তার বক্তব্য শেষ করার আগে এক পর্যায়ে বলেন, নিজের ঘরে অতিথিদের এমনভাবে প্রশ্ন করা ঠিক নয়। এমন অনুষ্ঠানে এমন প্রশ্ন করা শোভন দেখায় না। এতে সম্মানও বাড়ে না। তিনি বলেন, ‘ডোন্ট ডু অন ষ্টেজ, ডোন্ট ডু দ্যাট’। মেয়র তার বক্তব্যে নিউইয়র্ক ষ্টেট অ্যাসেম্বলীওম্যান জেনিফার রাজকুমারের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তাকে সহযোগিতা করার জন্য বাংলাদেশীদের প্রতি আহ্বান জানান।
জেবিবিএ’র অনুষ্ঠানে বাংলাদেশি খন্দকার মোদাচ্ছের হত্যার বিষয়ে জানতে চেয়ে একজনের প্রশ্ন করায় অনুষ্ঠানস্থলে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। এজন্য উপস্থাপক আশরাফুল হাসান বুলবুল উপস্থিত সকলের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।