কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সিসিটিভির অপারেটর নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় দুই যুগ্ম পরিচালককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। বরখাস্ত হওয়া দুই যুগ্ম পরিচালক হলেন- আবদুল্লাহ আল মাবুদ ও আলমাছ আলী।
শনিবার (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, সিসিটিভির অপারেটর নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতিতে সহায়তার অভিযোগে দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সিসিটিভি অপারেটর নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি ও সহায়তার অভিযোগে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওই নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ২৬ জন সিসিটিভি অপারেটর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। ২০২০ সালের ২৭ মার্চ পরীক্ষা গ্রহণের দিন নির্ধারণ করা হলেও তা পিছিয়ে ১৬ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হয়।
৭০০ জন চাকরি প্রার্থী আবেদন করলেও পরীক্ষায় অংশ নেন ১৪২ জন। উত্তীর্ণ হয় ২১ শতাংশ। চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেওয়া আবু বকর সিদ্দিকের হাতের লেখা গড়মিলের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে স্বীকার করেন তার পক্ষে নেত্তানন্দ পাল নামে একজন পরীক্ষা দিয়েছেন।
আবু বকর সিদ্দিকের পক্ষে নেত্তানন্দ পালের পরীক্ষা দেওয়ার এমন পরিকল্পনা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাবুদ। চাকরি প্রার্থী আবু বকর সিদ্দিক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের যুগ্ম পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাবুদের সঙ্গে নেত্তানন্দের পরিচয় করিয়ে দেন অপর পরিচালক আলমাছ আলী। বিনিময়ে আলমাছ আলীকে ব্যাংকের মাধ্যমে দুই লাখ টাকা দিয়েছেন আবু বকর সিদ্দিক। বিষয়টি জানার পরে তদন্তের নির্দেশ দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির।
তদন্ত কমিটি ঘটনার সত্যতা পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে চলতি বছরের ১৩ জুন আবদুল্লাহ আল মাবুদ ও আলমাছ আলীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আলমাছ আলী তদন্ত কমিটিকে জানিয়েছেন ওই দুই লাখ টাকা নেত্তানন্দকে দেওয়া হয়েছে। দুই যুগ্ম পরিচালকের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এর আগে বিভিন্ন সময় রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধরা পড়লেও প্রথমবারের মতো নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংকে নিয়োগের জালিয়াতি ধরা পড়ায় আগের নিয়োগ পরীক্ষায়ও জালিয়াতি হয়েছে বলে আশঙ্কা করছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।