সামরিক বাহিনীর কেন্দ্রীয় কমান্ড কিংবা নয়াদিল্লিতে আসীন কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কোনো নির্দেশ না আসায় এখনও মালদ্বীপেই অবস্থান করছেন ভারতীয় সেনারা। ভারতীয় নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আর. হরি কুমার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে আর. হরি কুমার বলেন, ‘আমরা এখনও (কেন্দ্র থেকে) এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা পাইনি। কেন্দ্রীয় কমান্ড যে সিদ্ধান্ত জানাবে, আমরা তা মেনে নেবো।’
প্রসঙ্গত, বিশ্বের একটি মাত্র দেশে সামরিক ঘাঁটি রয়েছে ভারতের। সেই দেশটির নাম মালদ্বীপ। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতেই মালদ্বীপে সেনাঘাঁটি রেখেছে চীন। ঘাঁটিটিতে বর্তমানে রয়েছেন ৮৮ জন সেনা যাদের প্রধান কাজ ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নজরদারি করা।
সাগরে নজরদারির পাশাপাশি অবশ্য বিভিন্ন কাজে মালদ্বীপের প্রশাসনকে সহযোগিতাও করেন ভারতীয় সেনারা।
তবে দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট এবং রাজনৈতিক দল পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ মুইজ্জু তার দেশে ভারতীয় সেনাদের অবস্থানের ঘোরতর বিরোধী। ভারতবিরোধী এবং চীনঘেঁষা রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত মুইজ্জু গত সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশের প্রেসিডেন্ট হন। তার প্রধান নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল মালদ্বীপের ভূখণ্ড থেকে ভারতীয় সেনাদের বিদায় করা।
গত ১৪ জানুয়ারি সেনা প্রত্যাহারের জন্য নয়াদিল্লিকে আল্টিমেটাম দেন মুইজ্জু। তার নেতৃত্বাধীন প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয় আগামী ১৫ মার্চের মধ্যে ভারতীয় সেনাদের ফিরিয়ে নিতে হবে। নয়াদিল্লি তাতে কোনো আপত্তি জানায়নি।
কিন্তু এর মধ্যে লাক্ষাদ্বীপে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভ্রমণ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেই ভ্রমণ সংক্রান্ত কিছু ছবি প্রকাশের পর অনলাইনে ব্যাপক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন ভারত ও মালদ্বীপের নেটিজেনরা। হাজার হাজার ভারতীয় পর্যটক মালদ্বীপে তাদের ভ্রমণ বাতিল করেন। মালদ্বীপের প্রধান বিরোধী দল মালদ্বীভিয়ান ডেমোক্রেটিক পার্টির রাজনীতিকরা কঠোর সমালোচনা শুরু করেন মুইজ্জুর। অনেকে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তার অপসারণের দাবিও তোলেন।
ভারতের সঙ্গে মালদ্বীপের কূটনৈতিক সম্পর্ক এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। সাম্প্রতিক এই দ্বন্দ্ব ঘিরে মালদ্বীপের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বেশ চাপে রয়েছেন মুইজ্জু।