পুরুষদের আংটি পরার প্রবণতা বাড়ছে, ইসলাম কী বলে?

হজরত আবেস ইবনে রাবিআ রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত; তিনি বলেন, আমি ওমর ইবনে খাত্তাব রাদিআল্লাহু আনহুকে হাজরে আসওয়াদ চুমু খেতে দেখেছি; এমতাবস্থায় যে, তিনি বলছিলেন—আমি নিশ্চিতভাবে জানি—তুমি একটা পাথর! তুমি না কারও উপকার করতে পারো, আর না অপকার। আমি যদি রাসূলুল্লাহ ﷺ কে তোমাকে চুমু খেতে না দেখতাম, তাহলে আমি কখনোই তোমাকে চুমু খেতে খেতাম না। (বুখারি : ১৫৯৭, মুসলিম : ১২৭০)

বাইতুল্লাহ শরিফের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে মাতাফ থেকে দেড় মিটার (চার ফুট) উঁচুতে অবস্থিত ‘হাজরে আসওয়াদ’ পৃথিবীর সবচেয়ে সম্মানিত ও শ্রেষ্ঠ পাথর। শ্রেষ্ঠ পাথরেরই যদি ভালো মন্দ করার ক্ষমতা না থাকে তাহলে সোলাইমানি আকিক, গোমেদ, নীলা, মুন ইত্যাদি চটকদার নামের পাথরের ভালো মন্দ করার ক্ষমতা আসবে কোত্থেকে? তাছাড়া পাথরের যদি বিন্দুমাত্র ক্ষমতা থাকতই, তাহলে এসব পাথর বিক্রেতারাই দুনিয়ার হর্তাকর্তা হতো। যে পাথর তার মালিক তথা জ্যোতিষীর ভাগ্য বদলাতে পারে না, সে অন্যদের ভাগ্য কীভাবে বদলাবে?

রাশিচক্রের প্রতি বিশ্বাস রেখে যারা এসব ভূয়া পাথর ব্যবহার করে তাদেরকে একটা কথা প্রায়ই বলতে শোনা যায়—এসবের কারণে তাদের নাকি শনির দশা কেটে যায়, রাহুর গ্রাস ও কালের দৃষ্টি থেকে রক্ষা পায়, ফাড়া কেটে যায়, দূর্ভাগ্য দূর হয়, নানান বিপদ-আপদ থেকে তারা রক্ষা পায় ইত্যাদি। আচ্ছা, তাদের কী কী বিপদ ছিল আর কী কী বিপদ কেটে গেছে—এগুলো তারা বুঝল কীভাবে? তাদের কাছে কি এর কোনো সদুত্তর আছে?

বস্তুত বিশেষ উদ্দেশ্যে আংটি বা পাথর ব্যবহার করা একদিকে যেমন অযৌক্তিক ও অবৈজ্ঞানিক, অন্যদিকে হারাম ও শিরিক। কারণ মানুষের একমাত্র ভাগ্যবিধাতা হলেন আল্লাহ তাআলা।

তাঁকে ছাড়া আর কারও ক্ষমতা নেই ভাগ্য পরিবর্তন করার। এ সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, হজরত আনাস ইবনে মালিক রাদিআল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল ﷺ বলেছেন, আমার পরে আমার উম্মতের ব্যাপারে আমি ৫টি বিষয়ের আশংকা করছি, এর মাঝে রয়েছে তাকদিরে অবিশ্বাস এবং গ্রহ-নক্ষত্রের বিশ্বাস। (মুসনাদে আবি ইয়ালা : ৪১৩৫)

পুরুষের জন্য রূপার আংটি ব্যতিত সকল প্রকার আংটি ব্যবহার করা নিষিদ্ধ। আর রূপার পরিমাণ এক মিসকালের চেয়ে কম অর্থাৎ সাড়ে চার মাশা (৪.৩৭৪ গ্রাম) এর চেয়ে কম হতে হবে।

এক হাদিসে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আমর রাদিআল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ এক ব্যক্তিকে স্বর্ণের আংটি পরিহিত দেখে তার থেকে তিনি মুখ ফিরিয়ে নিলেন। লোকটি তখন তা খুলে ফেলল। এরপর সে লোহার আংটি বানাল। রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, এটা তো আরো মন্দ, এটা জাহান্নামিদের অলঙ্কার। তখন ঐ ব্যক্তি তা খুলে ফেলল এবং একটি রূপার আংটি বানাল। রাসূলুল্লাহ ﷺ তখন নিরব থাকলেন। (মুসনাদে আহমদ : ৬৫১৮)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

রোজা রাখার বিস্ময়কর ১০ বৈজ্ঞানিক উপকারিতা

নূর নিউজ

নবী সা. প্রতি বিরল ভালোবাসা

নূর নিউজ

দায়িত্বশীলদের সম্পর্কে যা বলেছেন নবীজি সা.

নূর নিউজ