মসজিদ আল্লাহ তায়ালার ঘর। আল্লাহর ইবাদতের জন্যই মসজিদ বিশেষভাবে নির্মিত হয়েছে বলে পবিত্র কোরআনে বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আর নিশ্চয় মসজিদগুলো আল্লাহরই জন্য। কাজেই তোমরা আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডেকো না। (সূরা জিন, আয়াত : ১৮)
অর্থাৎ, মসজিদগুলো শুধু আল্লাহ তায়ালার ইবাদতের জন্যে নির্মিত হয়েছে। অতএব, মসজিদে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা ছাড়া অন্য কাউকে সাহায্যের জন্যে ডাকা যাবে না। সেখানে আল্লাহর ইবাদাতের সাথে সাথে অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না।
যেমন ইহুদী ও নাসারারা তাদের উপাসনালয়সমূহে এ ধরনের শিরক করে থাকে। অনুরূপভাবে মসজিদসমূহকে ভ্রান্ত আকীদা-বিশ্বাস ও মিথ্যা কর্মকাণ্ড থেকেও পবিত্র রাখতে হবে।
মসজিদ অর্থ সিজদা করার জায়গা। সিজদাও নামাজের একটি রুকন। এই জন্য নামাজ পড়ার স্থানকে মসজিদ বলা হয়। আয়াতের উদ্দেশ্য স্পষ্ট যে, মসজিদগুলোর উদ্দেশ্য হল, শুধু এক আল্লাহর ইবাদত করা। তাই মসজিদগুলোতে অন্য কারো ইবাদত করা, অন্য কারো কাছে প্রার্থনা করা এবং অন্য কারো কাছে ফরিয়াদ করা ও সাহায্য চাওয়া জায়েয নয়।
এই বিষয়গুলো তো এমনিতেই নিষেধ। কোথাও গায়রুল্লাহর ইবাদত করা জায়েয নয়। তবে মসজিদের কথা বিশেষ করে এই জন্য উল্লেখ করা হয়েছে যে, এগুলোর নির্মাণ করার উদ্দেশ্যই হল এক আল্লাহর ইবাদত করা। যদি এখানেও গায়রুল্লাহর আহবান আরম্ভ হয়ে যায়, তাহলে এটা অতি জঘন্য এবং অন্যায় আচরণ হবে।
আল্লাহর ইবাদতের জন্য নির্মিত প্রথম মসজিদ বায়তুল্লাহ। এ বিষয়ে হজরত আবু জার রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন—
আমি জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল সা.! পৃথিবীতে কোন মসজিদটি সর্বপ্রথম নির্মিত হয়েছিল? তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি আবার জিজ্ঞেস করলাম, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদে আকসা বা বাইতুল মাকদিস। আমি আবারো জিজ্ঞেস করলাম, এ দুটি মসজিদের নিমার্ণ কালের মধ্যে ব্যবধান কতো? তিনি বললেন চল্লিশ বছর। (তিনি আরও বললেন) যেখানেই নামাজের সময় হয়ে যাবে, তুমি সেখানেই নামাজ পড়ে নেবে। কারণ, সে জায়গাটাও মসজিদ। (মুসলিম, হাদিস : ১০৫২)
এ হাদিসের মাধ্যমে বুঝা যায়, গোটা দুনিয়ার প্রতিটি স্থানই মসজিদের মতো বা নামাজের জন্য উপযোগী। তবে সাধারণভাবে পুরো পৃথিবী বা যেকোনো স্থানে নামাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হলেও অপবিত্র কোনো জায়গায় নামাজ পড়া যাবে না। নামাজ পড়ার জন্য জায়গাটি পবিত্র হতে হবে।