প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর; পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে দোটানায় সরকার

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন দিল্লি সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে সরকার দোটানায় রয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার ব্যাপারে ভারতকে জড়িয়ে মন্তব্য করে দলের মধ্যে চরম সমালোচনার মুখে পড়েছেন আব্দুল মোমেন। নেতারা ইতোমধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন। আব্দুল মোমেনকে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী করা সঠিক হবে কি না, তা বোঝার চেষ্টা করছেন সরকারের নীতিনির্ধারকরা।

চট্টগ্রামে এক অনুষ্ঠানে আপত্তিকর মন্তব্য করার পরের দিন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আব্দুল মোমেনকে ভর্ৎসনা করা হয় বলে জানিয়েছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক নীতিনির্ধারক।

তারা বলেছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই মন্তব্য দেশের জনগণ, এমনকি ভারতের শাসক মহলও ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেনি। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ এই সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেনকে সঙ্গী হিসাবে নেওয়া ঠিক হবে না বলেই তারা মনে করছেন।

পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী আগামী ৫ সেপ্টেম্বর দিল্লি যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। অতীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ছাড়াই বিদেশ সফরে গেছেন-এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাই সম্ভাব্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি এড়াতে দিল্লি সফরে আব্দুল মোমেনকে না নেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পরামর্শ দিয়েছেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় দিল্লি সফরে প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গীর পূর্ণাঙ্গ তালিকা চূড়ান্ত করেনি।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর এই সফর রাজনৈতিক দিক দিয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এই সফরে কুশিয়ারার পানি উত্তোলন নিয়ে সমঝোতা স্মারক হতে পারে। নিষ্পত্তি হতে পারে আরও কয়েকটি অমীমাংসিত বিষয়। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে বাংলাদেশে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। তাই আগামী নির্বাচনের আগে এটাই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সর্বশেষ ভারত সফর বলে ধারণা করা হচ্ছে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দিক দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ভারত সফরকে গুরুত্বের সঙ্গে বিশ্লেষকরা দেখলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের বক্তব্যে দুই দেশের সরকারই কিছুটা বিব্রত।

সরকারের নীতিনির্ধারকরা আসন্ন দিল্লি সফরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন অন্তর্ভুক্ত থাকলে কোনো ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হতে পারে-এর সম্ভাব্য ধারণা পাওয়ার চেষ্টা করছেন। ভারতের গণমাধ্যমের প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে পারেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী-এমন আশঙ্কা করছেন তারা।

মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গত বছর (২০২১ সালের মার্চে) সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর করেন। সেসময় তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দিল্লি সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে যান। এর আগে ২০১৯ সালের অক্টোবরে শেখ হাসিনা সর্বশেষ ভারত সফর করেন। এই সফরে দুই দেশের মধ্যকার বিদ্যমান সুসম্পর্ক সামনের দিনগুলোয় আরও এগিয়ে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করা হবে।

শেখ হাসিনা ৫ সেপ্টেম্বর ভারত গিয়ে সেখানকার কূটনীতিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে ৬ সেপ্টেম্বর। দুই নেতার যৌথ ঘোষণায় বাংলাদেশ ও ভারতের বিদ্যমান সুসম্পর্কের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ফোকাস করা হবে বলে জানা গেছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে এমন একটি আয়োজনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন যেন কোনো অস্বস্তির কারণ না হয়ে দাঁড়ান, সে ব্যাপারে সরকারের নীতিনির্ধারকরা সতর্ক রয়েছেন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

ভারতীয় পণ্য বর্জনের ঘোষণা কি আদৌ কার্যকর হবে?

নূর নিউজ

দলীয় সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনই এদেশের জনগণ মেনে নেবে না -মুফতী ফয়জুল করীম

নূর নিউজ

সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় বাংলাদেশের নিন্দা

নূর নিউজ