কোনো বক্তির ওপর হজ ফরজ হওয়ার পর সে যদি কোনো কারণবশত হজ করতে না পারে কোনও সমস্যার কারণে। যেমন তার শারীরিক সক্ষমতা থাকলো না অথবা এমন অসুস্থ হয়ে পড়ল, যা থেকে আর সুস্থ হওয়ার আশা নেই অথবা অন্ধ বা প্রতিবন্ধী হয়ে গেল বা বার্ধক্যের দরুন এমন দুর্বল হয়ে গেল যে এখন তার পক্ষে সফর করা সম্ভব নয়, তখন তার জন্য নিজের পক্ষ থেকে কাউকে পাঠিয়ে বদলি হজ করানো, অথবা মৃত্যুর পর তার পরিত্যক্ত সম্পদ থেকে তার নামে বদলি হজ করানোর অসিয়ত করা ফরজ।
বদলি হজের বিষয়ে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, বিদায় হজে খাছআম গোত্রের একজন নারী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার বাবার উপর হজ ফরজ হয়েছে, কিন্তু তিনি এত বৃদ্ধ যে, বাহনের উপর স্থির হয়ে বসে থাকতে পারেন না। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব?’ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ। (তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারবে)।’-(সহীহ বুখারী ১/২০৫; সহীহ মুসলিম ১/৪৩১)
বদলি হজ করানোর ক্ষেত্রে কেমন মানুষ নির্বাচন করা হবে। এ বিষয়ে আলেমরা বলেন, হানাফি মাজহাব অনুযায়ী যে ব্যক্তি এখনো নিজের হজ করেনি, সে-ও কারো পক্ষ থেকে বদলি হজ করতে পারবে, তবে মাকরুহ হবে। (আপকে মাসায়েল : ৪/৬৯)
তবে যে ব্যক্তি এখনো নিজের হজ করেনি, তাকে হজে পাঠানো মাকরুহে তানজিহি অর্থাৎ অনুত্তম। তারপরও যদি হজে যায়, তাহলে বদলি হজ আদায় হয়ে যাবে। অতএব, এমন মানুষকে পাঠানো উচিত, যে একবার হজ করেছে। চাই সে ধনী হোক বা দরিদ্র। এ বিষয়ে ধনী-দরিদ্রের পার্থক্য নেই। (আপকে মাসায়েল : ৪/৭৬; ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৫৭৩; কিতাবুল ফিকহ : ১/১৩২২)
আরেকটি বিষয় হলো- কোনো নারীর পক্ষ থেকে বদলি হজ করাতে হলে অন্য নারী দিয়েই করাতে হবে এমন কোনো আবশ্যকতা নেই। বরং নারীর পক্ষ থেকে পুরুষও বদলি হজ করতে পারবে এবং পুরুষের পক্ষ থেকে নারীও হজ করতে পারবে। (আপকে মাসায়েল : ৪/৭৫)
নারী ও দাসও বদলি হজ করতে পারবে। (কিতাবুল ফিকহ : ১/১১৬৬) তবে হজ যেহেতু ফরজ ইবাদত তাই নাবালেগ (অপ্রাপ্তবয়স্ক) বদলি হজ করতে পারবে না। (আপকে মাসায়েল : ৪/৭৭)