এখনো বাড়তি দরেই বিক্রি হচ্ছে ভোজ্যতেল। প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন ভোক্তাকে ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকার পরও ভরা মৌসুমে প্রতিকেজি পেঁয়াজ খুচরা বাজারে সর্বোচ্চ ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এতে ক্রেতার বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে। শনিবার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে খোলা সয়াবিন কেজিতে ৩০ টাকা বেশি রাখায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর আবুল খায়ের ট্রেডার্স সিলগালা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির ৬০ ব্যারেল ভোজ্যতেল জব্দ ও দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আর শ্যামবাজারে বেশি দরে পেঁয়াজ বিক্রি করায় অধিদপ্তর দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে।
এদিন অধিদপ্তরের বিশেষ অভিযানে নেতৃত্ব দেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, রাজধানীর শ্যামবাজারে পেঁয়াজের আড়ত ও যাত্রাবাড়ীর ভোজ্যতেলের পাইকারি প্রতিষ্ঠানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় যাত্রাবাড়ীর আবুল খায়ের ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানে খোলা সয়াবিন তেল কেজিতে ৩০ টাকা বেশি মূল্যে বিক্রি করতে দেখা যায়। সরকারের খোলা সয়াবিন তেলের বর্তমানে নির্ধারিত মূল্য ১৪৩ টাকা। তবে তারা বিক্রি করেছে ১৭৩ টাকায়। প্রতিষ্ঠানটি বেশি দামে তেল বিক্রির কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই এই অপরাধে আবুল খায়ের ট্রেডার্সকে সিলগালা করা হয়েছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটিতে থাকা প্রায় ৬০ ড্রাম তেল জব্দ করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষকে রোববার অধিদপ্তরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে আসতে বলা হয়েছে। অসংগতি পেলে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার জানান, শ্যামবাজার এলাকায় বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি করার অপরাধে আরও দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। ভোক্তাদের স্বার্থে আমাদের অভিযান চলমান থাকবে। যদি কোনো ব্যবসায়ী অবৈধভাবে বেশি মুনাফার লোভে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজার পণ্য মূল্য তালিকায় শনিবার বলা হয়েছে, গত একদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১৫ দশমিক ৭৯ শতাংশ দাম বেড়েছে। আর মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ১২০ শতাংশ। পাশাপাশি এক লিটারের বোতলজাত সয়াবিন সাত দিনের ব্যবধানে ২ দশমিক ১৩ ও মাসের ব্যবধানে ৩ শতাংশ দাম বেড়েছে।
শনিবার রাজধানীর খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ দিন খুচরা বাজারে খোলা সয়াবিন বিক্রি হয়নি। প্রতিলিটার বোতলজাত সয়াবিন ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পাশাপাশি হঠাৎ করেই অস্থির হয়েছে পেঁয়াজের বাজার। বিক্রেতারা বলছেন, খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা একদিন আগেও ৫০-৫৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দাম বাড়ার কারণ হিসাবে কাওরান বাজারের খুচরা বিক্রেতা মো. সোনাই আলী যুগান্তরকে বলেন, পাইকারি মোকামে হঠাৎ করেই পেঁয়াজের দাম বাড়ানো হয়েছে। তাই বেশি দরে এনে বেশি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।