বিএনপির আন্দোলন নিয়ে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

বিএনপির আন্দোলন কর্মসূচিতে সহিংসতা করলে কঠোর হস্তে দমনের কথা জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত রাখার কথাও জানান তিনি।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নাম্বারের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণ থেকে শীতার্ত মানুষের মাঝে এই শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে এ কথা জানান তিনি। আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটি এ শীতবস্ত্র বিতরণ করে।

বিএনপির কর্মসূচি প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, আন্দোলন চালান। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা করবেন, মানুষের রুটি-রোজগারের বাধা দেবেন, হরতাল অবরোধের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করবেন, এটা কঠোর হস্তে দমন করা হবে। এসব ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। অনেক ভোগান্তি এ দেশে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছেন। আর এসব অপকর্ম করলে তার শাস্তি পেতেই হবে। কঠোরভাবে দমন করব এটাই সিদ্ধান্ত আমাদের। আপনারা যত আন্দোলন করুন, আমাদের শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ অব্যাহত থাকবে।

বিএনপির উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আন্দোলন করেন। ২৮ অক্টোবর এ দেশে আবার পাঁচ বছর পরে আসবে। তখন করবেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলন করার চেষ্টা করবেন। আপাতত আন্দোলনে জনগণ দূরে থাক আপনাদের নেতা-কর্মীরা সাড়া দেবে না। জনগণ যে আন্দোলনে নেই সেটা কিসের আন্দোলন। হতাশ হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরাও আসবে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে এখন বিএনপি হচ্ছে ডামি দল। আর কোনো ডামি দলের দরকার নেই। ওরা ডামি হয়ে গেছে। শোকে পাথর হয়ে গেছে। নেতা-কর্মীদের ঘুম নেই। সব আশা হারিয়ে ফেলেছে, সব হতাশায়। ওরা আন্দোলন করবে? সারা বাংলাদেশে উত্তাল আন্দোলন হবে, জনতার ঢল নামবে, এসব শুনে ঘোড়াও হাসে। এরা নিজেদেরকে নিজেরাই ভুয়া করে ফেলেছে। বিএনপির এই মুহূর্তে কোনো আশা নেই। নিষেধাজ্ঞাও নেই, ভিসানীতিও নেই, ভিসা নিষেধাজ্ঞার আশায় আশায় দিন চলে যায়, রাত পোহায় এ হলো বিএনপি।

তিনি বলেন, নির্বাচন না করে বিএনপি যে ভুল করেছে ‘অচিরেই’ তা টের পাবে। তাদের এখন কালো পতাকা মিছিল, এটা হচ্ছে শোক পালনের কর্মসূচি। কালো পতাকা শোকের চিহ্ন, তাহলে তারা নিজেরাই জাতিকে বলে দিচ্ছে আমরা (বিএনপি) পরাজয় বরণ করেছি। সেই জন্য আমরা আজকে শোকের কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দিয়েছি।

সুনির্দিষ্ট অভিযোগের মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার হয়েছেন বলে দাবি করেন ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এখন তারা আইনগতভাবে মোকাবিলা করুক। অপরাধের সঙ্গে যারা জড়িত নয়, আইনি প্রক্রিয়ায় বের হয়ে যাবে। কোনো দেশে অপরাধ করে শাস্তি হবে না? আমেরিকার কথায় আমরা ছেড়ে দেব? এটা কোনো কথা। তাহলে ট্রাম্পের (ডোনাল্ড ট্রাম্প) বিচার কেন হচ্ছে? ৯১টি অভিযোগে ট্রাম্পের বিচার হচ্ছে আমেরিকার আদালতে। যে দেশের প্রেসিডেন্ট আজকে শাস্তি পাচ্ছে। প্রেসিডেন্টের আদালতে দাঁড়ানোও শাস্তি। সেই দেশ আমাদেরকে কিভাবে বলে অপরাধীদের ছেড়ে দিতে হবে। ২৫ হাজার না কত হাজার। আমাদের জেলে এত লোক নেই। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে বলেছেন ১১ থেকে ১২ হাজারের মতো অপরাধে অভিযুক্ত বিএনপির নেতা-কর্মী জেলে আছে।

‘জাতিসংঘকে দিয়েও তারা বলাচ্ছে ২৫ হাজার জেলে আছে। লবিং ভালোই করে। লবিংয়ের ওস্তাদ এ দল,’ যোগ করেন তিনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গত নির্বাচন নিয়ে দেশটি পরাজিত প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কারচুপির অভিযোগ তুলে ধরে কাদের বলেন, তারা আমাদেরকে সুষ্ঠু নির্বাচনের উপদেশ দেয়। সুষ্ঠু নির্বাচন আগে নিজেরা করুন, তারপর উপদেশ।

আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক ও উপকমিটির সদস্য সচিব আমিনুল ইসলাম আমিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন— সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসিম কুমার উকিল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, নির্মল কুমার চ্যাটার্জি ও ঢাকা ১০ আসনের সংসদ সদস্য ফেরদৌস আহমেদ প্রমুখ।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

আলজাজিরা নিয়ে কথা বলে জেলে যেতে চাই না : ডা. জাফরুল্লাহ

আলাউদ্দিন

অচিরেই সব রায় বাংলায় দেওয়া হবে : প্রধান বিচারপতি

আলাউদ্দিন

তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসানকে পদত্যাগের নির্দেশ

আনসারুল হক