বৃটেনের বিশ্ব ন্যাটো জোটের নতুন ফর্মুলা

ন্যাটো সামরিক জোটে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তিকে কেন্দ্র করে যে আঞ্চলিক সংকট তৈরি হয়েছে তা এখন আন্তর্জাতিক সংকটে রূপ নিয়েছে। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বিশ্বের দেশগুলোকে নিয়ে বৃহত্তর সামরিক জোট গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন যার নাম হবে ‘বিশ্ব ন্যাটো জোট’।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যাটো জোটের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে এ আহ্বান জানান। তিনি ন্যাটো জোটে প্রবেশে একাধিক দরজা খোলা রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেছেন, ‘ন্যাটো সামরিক জোটে ফিনল্যান্ড ও সুইডেনের অন্তর্ভুক্তির ফলে ইউরোপের নিরাপত্তা জোরদার হবে। কিন্তু বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য বৃহত্তর সামরিক জোট তথা ‘বিশ্ব ন্যাটো জোট’ গঠন করা। এই নয়া সামরিক জোট ইউরোপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এ ছাড়া প্রশান্ত মহাসগরীয় এলাকার নিরাপত্তার বিষয়টিও ভাবতে হবে’।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমন সময় বৃহত্তর সামরিক জোট তথা ‘বিশ্ব ন্যাটো জোট’ গঠনের প্রস্তাব দিলেন যখন চীন ও রাশিয়া ন্যাটো জোটের সম্প্রসারণ প্রচেষ্টার তীব্র বিরোধিতা করে আসছে এবং এটাকে তারা বিশ্বের নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করছে।

১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোট অর্থাৎ ন্যাটো সামরিক জোট গঠন করা হয়েছিল। এ জোট গঠনের মূল উদ্দেশ্য ছিল এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান মজবুত করা এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঠেকানো। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপের বহু দেশ এ জোটের সদস্য। এ জোটের নীতি হচ্ছে কোনো একটি দেশ যদি আক্রান্ত হয় তাহলে জোটের অন্য সব দেশের ওপরও আক্রমণ হিসেবে ধরে নেয়া হবে এবং সবাই মিলে আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

ন্যাটো গঠনের উদ্দেশ্যই ছিল সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নকে ঠেকানো। এ ছাড়া জার্মানিসহ ইউরোপের আরো বেশ কিছু দেশকে মোকাবেলা করাও ছিল মার্কিন নেতৃত্বে ন্যাটো জোটের আরেকটি উদ্দেশ্য। কিন্তু বিশ্বের রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ায় এবং শীতল যুদ্ধকালীন দুই মেরুকেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থার অবসান ঘটার পর ন্যাটোর লক্ষ্য উদ্দেশ্যে কিছুটা পরিবর্তন আসে এবং প্রাচ্যের দিকে তারা নজর দেয় যাতে এশিয়ার দেশগুলোর ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা যায়। এরপর পোল্যান্ড, চেক প্রজাতন্ত্রের মতো দেশগুলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটো জোটে যোগ দেয় এবং এ জোট নতুন লক্ষ্য অর্জনে প্রচেষ্টা শুরু করে।

 

প্রকৃতপক্ষে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রভাব বিস্তারের জন্য আমেরিকা ও ইউরোপ ন্যাটো জোটকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমানে ইউক্রেনকে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবহারের চেষ্টা করছিল পাশ্চাত্যের দেশগুলো। ধারণা করা হচ্ছে ন্যাটোর মাধ্যমে কেবল রাশিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা কিংবা প্রাচ্যের দিকে অগ্রসর হওয়া মার্কিন কর্মকর্তাদের একমাত্র লক্ষ্য নয়। বরং তাদের আরো বড় লক্ষ্য রয়েছে যা বৃহত্তর সামরিক জোট তথা ‘বিশ্ব ন্যাটো জোট’ গঠনের জন্য ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান জানানো থেকেই বোঝা যায়। তাদের এখন মূল টার্গেট চীন ও রাশিয়াকে ঠেকানো।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

দিল্লিতে মাংসের দোকান বন্ধের নির্দেশ নিয়ে বিতর্কের ঝড়

নূর নিউজ

ন্যাটোর হুমকি বন্ধ হলেই ইউক্রেন অভিযানের সমাপ্তি: রাশিয়া

নূর নিউজ

ইউক্রেনকে শান্তির সমঝোতা করতে দিচ্ছে না পশ্চিমারা :‌ মস্কো

নূর নিউজ