ভদ্র আচরণে ‍সুন্দর হয় জীবন

সৌম্য ও ভদ্রতাই মানুষের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য। শালীনতা ও নম্রতা সবচেয়ে বড় গুণ। কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে যদি আপনি সুন্দর হাসি দেন, একটি কোমল কথা বলেন, তবে আপনি একজন সত্যিকার সফল ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারলেন। যখন কোনো মৌমাছি কোনো ফুলে বসে তখন সে এটাকে ধ্বংস (নষ্ট) করে না।
কেননা আল্লাহ কোমলতার বিনিময়ে যা দান করেন কঠোরতার বিনিময়ে তা দান করেন না।কিছু লোক আছেন যাঁদের ব্যক্তিত্ব চুম্বকের মতো আশপাশের লোকদের আকর্ষণ করে। কেননা তাঁরা তাঁদের কোমল ও ভদ্র কথা, তাঁদের ভালো ব্যবহার ও তাঁদের মহৎ কাজের জন্য তাঁরা (ওই লোকদের) ভালোবাসার পাত্র হন। অন্যের বন্ধুত্ব অর্জন করার কৌশল মহান ও বুজুর্গ ব্যক্তিরা জানেন।
এ জন্য সব সময় একদল লোক তাঁদের ঘিরে থাকে। কোনো সমাবেশে শুধু তাঁদের উপস্থিতিটাই আশীর্বাদ, তাঁরা অনুপস্থিত থাকলে তাঁদের অভাববোধ করা হয় এবং তাঁদের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়।বুজুর্গ ব্যক্তিদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো ‘খারাপকে ভালো দিয়ে প্রতিহত করো, তাহলে তোমার আর যার মধ্যে শত্রুতা আছে সে এমন হয়ে যাবে যেন সে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু।’ (সুরা : হা-মিম-সাজদা, আয়াত : ৩৪)মন্দকে ভালো দ্বারা দূর করার উদ্দেশ্য ক্রোধের সময় ধৈর্য ধারণ করা এবং যারা মন্দ আচরণ করে ক্ষমা করে দেওয়া।

মহান ব্যক্তিরা তাঁদের সততা, ক্ষমা ও ভদ্রতা দিয়ে অন্যের ভেতর থেকে হিংসাকে বের করে ফেলেন। তাঁদের সঙ্গে যে মন্দ আচরণ করা হয়েছে তাঁরা তা ভুলে যান আর যে দয়া তাঁরা পেয়েছেন তাঁরা শুধু তাই মনে রাখেন। তাঁদের কটু ও রুক্ষ্ম কথা বলা হলে তাঁরা তা শোনেন না, বরং চিরতরে পেছনে না ফিরে তাঁরা তাঁদের পথে অনবরত সামনে চলতে থাকেন। তাঁরা শান্ত ও সৌম্য অবস্থায় থাকেন। সাধারণ জনগণ, বিশেষ করে মুসলমানরা তাঁদের হাত থেকে নিরাপদ থাকেন।
নবী করিম (সা.) বলেছেন, প্রকৃত মুসলিম সে, যার জিহ্বা ও হাত থেকে অন্য মুসলিম নিরাপদ থাকে। আর প্রকৃত মুমিন সে, যাকে অন্য মানুষ তাদের রক্ত (জীবন) ও সম্পদের ব্যাপারে বিশ্বাস করে।রাসুল (সা.) আরো বলেছেন, যারা আমার সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করেছে তাদের সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করার জন্য, যারা আমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করেছে বা আমাকে অত্যাচার করেছে তাদেরকে ক্ষমা করে দিতে এবং যারা আমাকে বঞ্চিত করেছে তাদেরকে দান করতে আল্লাহ আমাকে আদেশ করেছেন। (আল্লাহ বলেছেন) ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সত্কর্মশীলদের ভালোবাসেন। যারা ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে দেয়।’ (সুরা : আলে ইমরান, আয়াত : ১৩৪) 

এ ধরনের লোকদের এ পৃথিবীতে শান্তি ও প্রশান্তির এক আসন্ন পুরস্কারের ঘোষণা দিন। পরকালে জান্নাতে তাদের ক্ষমাশীল প্রভুর ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্যে থাকার এক মহা সুসংবাদও তাদের দিন। আমিন।

‘লা তাহজান’ অবলম্বনে

এ জাতীয় আরো সংবাদ

জান্নাতিরা যেভাবে পরস্পরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন

নূর নিউজ

ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন ও কিছু কথা

আনসারুল হক

হজ ফরজ হয়েছে কিনা বুঝবেন যেভাবে

নূর নিউজ