অক্সফোর্ডের করোনাভাইরাস টিকার প্রতি ডোজ চার ডলার মূল্যে বাংলাদেশকে সরবরাহ করবে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট (এসআইআই)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর দাম পড়বে প্রায় ৩৪০ টাকা। একাধিক সূত্রের বরাতে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, সেরামের কাছে ভারত যে মূল্যে এই টিকা পাচ্ছে বাংলাদেশের জন্য সেই মূল্য প্রায় দেড়গুণ (৪৭ শতাংশ) বেশি।
বিশাল পরিসরে ব্রিটিশ ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবিত করোনার টিকা উৎপাদন করছে ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। ওই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত নভেম্বরে ভারতীয় প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। সোমবার বাংলাদেশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, কোভিশিল্ড নামের এই টিকাটির প্রথম চালান আগামী ২৫ জানুয়ারি পৌঁছাবে। ফলে ফেব্রুয়ারির শুরুতেই টিকাটি গণহারে প্রয়োগ শুরু করা যাবে।
সংশ্লিষ্ট অন্তত ৩টি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, বাংলাদেশ সেরাম ইন্সটিটিউট থেকে প্রতিটি ভ্যাকসিন কিনছে ৪ ডলারে। ভারত যে দামে টিকা পাচ্ছে, এই মূল্য তার থেকে ৪৭ শতাংশ বেশি। এই ৩ সূত্রের একটি রয়টার্সকে বলেছে, বাংলাদেশের জন্য টিকাটির প্রতি ডোজের গড় মূল্য তিন ডলার করে হওয়া উচিত ছিল।
তবে বাংলাদেশ সরকারের আনুষ্ঠানিক ঘোষণার আগে কোনও সূত্রই নাম প্রকাশ করে কোনও কিছু জানাতে রাজি হননি। বাংলাদেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য সচিব কেউই এই বিষয়ে মন্তব্য করতে রয়টার্সের ফোন কলে সাড়া দেননি।
ভারতের পরিকল্পনা অনুযায়ী ৩০ কোটি মানুষকে টিকা প্রয়োগ করতে ৬০ কোটি ডোজ টিকার প্রয়োজন পড়বে। আর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি পরিমাণ টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট ইতোমধ্যে পাঁচ কোটি ডোজ টিকা ভারতে সরবরাহের জন্য মজুদ করে ফেলেছে।
আশা করা হচ্ছে ভারতের চাহিদার ৯০ শতাংশই পূরণ হবে অক্সফোর্ডের টিকার মাধ্যমে। ভারতকে প্রতি ডোজ ২০০ রুপি দামে সরবরাহ করছে সেরাম ইনস্টিটিউট। ভারতের বিপুল চাহিদার কারণে দেশটি অপেক্ষাকৃত কম দামে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে সেরাম।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা, গেটস ফাউন্ডেশন এবং জাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সহযোগিতার সেরাম একশ’ কোটি ডোজেরও বেশি টিকা নিম্ন আয়ের দেশগুলোর জন্য সরবরাহ করবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ ২৩ হাজার ৩০২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে সাত হাজার ৮০৩ জনের।