ভারতের বিহার প্রদেশে গরুর গোশত খাওয়ায় মুসলিম যুবককে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার এমন সংবাদ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যম।
বিভিন্ন ভারতীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ‘পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে মেরে ফেলা ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ খলিল আলম। তিনি জেডিইউয়ের সক্রিয় কর্মী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন।’
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, মোহাম্মদ খলিল আলম মাটিতে হাতজোড় করে বসে আছেন। আর তাকে ঘিরে রয়েছে বহু স্বঘোষিত উগ্রবাদী হিন্দু গো-রক্ষক। ওই উগ্রবাদীরা অনবরত খলিল আলমকে চড়–থাপ্পর মারছে। প্রশ্ন করা হচ্ছে, মুরগি–খাসি থাকা সত্ত্বেও কেন গরুর গোশত খেলেন তিনি? একা তিনি খেয়েছেন, নাকি ছেলেপুলে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও গরুর গোশত খাইয়েছেন। এসব কথা জানতে চাইছে আর খলিল আলমকে নিপীড়ন করছে ওই উগ্রবাদী হিন্দু যুবকেরা।
ভিডিওতে দেখা গেছে, বারবার কান মুলছেন খলিল আলম। ওই সময় তিনি বারবার বলছিলেন, ‘এবার ছেড়ে দিন। ভুল হয়ে গেছে।’ কিন্তু, তার কথা কেউ শোনেনি।
গত শুক্রবার বুড়ি গণ্ডক নদীর তীর থেকে খলিল আলমের লাশ উদ্ধার করা হয়। কারো কারো দাবি, তাকে মেরে পুঁতে দিয়ে গিয়েছে ওই উগ্রবাদী হিন্দু গো-রক্ষকেরা। আবার কেউ কেউ বলছেন, মারধর করে পেট্রল ঢেলে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে তাকে।
মোহাম্মদ খলিল আলমের পরিবার জানিয়েছে, ১৬ তারিখ থেকেই নিখোঁজ ছিলেন তিনি। থানায় অভিযোগ করেছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা।
মোহাম্মদ খলিল আলমের পরিবারের অভিযোগ, তারপর থেকেই তার পরিবারের কাছে একাধিক ফোন এসেছিল। ওই ফোন কলে মিথ্যা অভিযোগ করা হয় যে খলিল আলম কারোর কাছ থেকে এক লাখের বেশি টাকা ধার নিয়েছিল। ওই টাকা ফেরত না দেয়ায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে। টাকা ফেরত না দিলে খলিল আলমের কিডনি কেটে নেয়ার হুঁশিয়ারিও দেয়া হয়। এরপর নদীর তীর থেকে তার লাশ উদ্ধার হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে উত্তরপ্রদেশের দাদরিতে মোহাম্মদ আকলাখ নামের মুসলিম ব্যক্তিকে গরুর গোশত খাওয়ার ‘অপরাধে’ পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল। ওই স্মৃতিকেই উস্কে দিয়েছে বিহারের এ ঘটনা।
সূত্র : ভারতীয় গণমাধ্যম