আবদুল্লাহ ফিরোজী
সাভার প্রতিনিধি
ভারতে মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদ ও ইসলাম বিদ্বেষী নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে সাভারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ।
আজ ২৫ এপ্রিল শুক্রবার বাদ জুমা সাভার মডেল মসজিদের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রবীণ আলেমেদ্বীন ও ব্যাংক কলোনি মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা আবদুল্লাহ। হেফাজত ঢাকা জেলা উত্তরের সভাপতি ও যাদুরচর মাদরাসার মুহতামিম হাফেজ মাওলানা আলী আকবর কাসেমীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আলী আজম, যমযমনূর গ্রুপের এমডি হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ, মাওলানা শাহেদ জহিরী, মুফতি আমিনুল ইসলাম কাসেমী, মুফতি নাজমুল হাসান বিন নূরী, মুফতি মাহফুজ হায়দার কাসেমী, মুফতি আলী আকরাম প্রমুখ।
বিক্ষোভে বক্তারা ভারতে ওয়াকফ আইন বাতিল ও মুসলিম নির্যাতনের প্রতিবাদ জানিয়ে আরও বলেন, ভারতে মুসলিম নির্যাতন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে, যা গভীর উদ্বেগের কারণ। লাউড স্পিকারে আজান দেয়ায় ইমামের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। হোলি উৎসবের নামে নামাজ আদায়ে বাধা দেওয়া এবং নামাজরত মুসল্লিদের ওপর সরাসরি হামলা চালানো হচ্ছে।
ভারতে মুসলিম নির্যাতন মোটেই দুয়েকটি ঘটনায় সীমাবদ্ধ নয়। সেখানে অনেক বড় পরিসরে মসজিদ আক্রান্ত, বাড়িঘর উচ্ছেদ, পরিবারকে বিচ্ছিন্ন, তরুণদের গণপিটুনি, নারীদের হেনস্তাসহ সমগ্র মুসলিম জাতীকে নিজ ভূমিতে দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিকে পরিণত করা হয়েছে।
ভারতের মুসলমানদের ওপর এ নির্যাতন নিপীড়ন বন্ধে ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জোরাল ভূমিকা রাখার দাবি জানান তারা।
সমাবেশে বক্তারা নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রদত্ত প্রতিবেদন ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে অবিলম্বে কমিশন বাতিলের দাবি জানান। তারা বলেন, কমিশনের প্রতিবেদনে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। মুসলিম পারিবারিক আইন সংস্কার করে সকল ধর্মের জন্য অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে যেখানে বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে নারী-পুরুষের কথিত সমান অধিকার থাকবে। স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা করতে পারবে। যৌনকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব প্রস্তাবনা পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহর বিধানের সাথে সরাসরি সাংঘর্ষিক। বাংলাদেশের মুসলিম নারী সমাজের সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। এই প্রস্তাবনার মাধ্যমে দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক ভারসাম্য এবং পারিবারিক কাঠামো ধ্বংস করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এই কমিশনের সদস্যরা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে অবিলম্বে নারী সংস্কার কমিশন বাতিল এবং তাদের সকল বিতর্কিত প্রস্তাবনা রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রত্যাখ্যানের দাবি জানাই।
বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে হাফেজ মাওলানা আলী আকবর কাসেমীর নেতৃত্বে বিশাল একটি মিছিল ঢাকা আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিণ করে।