দাদা স্পিরিডন পুতিন ছিলেন একজন বাবুর্চি। আর বাবা স্পিরিডোনোভিচ পুতিন সোভিয়েত নৌবাহিনীর নিয়মিত সেনা। সেই সেনার ঘরে ১৯৫২ সালের ৭ অক্টোবর জন্ম নেন ভ্লাদিমির পুতিন। ছাত্রজীবন শেষ করেই গোয়েন্দা বাহিনীতে যোগ দেন তিনি। আর গোয়েন্দাগিরির পথ ধরেই আসেন রাজনীতিতে। যার সিঁড়ি বেয়ে পৌঁছে যান কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে। হয়ে ওঠেন রাশিয়ার সর্বেসর্বা।
পুতিনের বয়স এখন ৬৯ বছর। প্রায় ৬০ বছর আগে থেকেই মারামারি আর সংঘাতের নেশা ছিল লেলিনগ্রাদের (বর্তমান সেন্ট পিসবার্গ) কিশোর পুতিনের। সমবয়সী বন্ধুদের তটস্থ রাখত ছেলেটি। সেই নেশা থেকেই রপ্ত করেছিলেন জুডো। স্কুলে পড়া শেষ করার আগেই তার স্বপ্ন ছিল তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে কাজ করার। তার লড়াকু মনোভাবের প্রকাশ ঘটেছে বিভিন্ন সময়ে। ২০১৫ সালে তিনি বলেছিলেন, ‘কোনো লড়াই যদি অবশ্যম্ভাবী হয়, তাহলে প্রথম আঘাতটা আপনাকেই করতে হবে।’ পঞ্চাশ বছর আগে লেলিনগ্রাদের রাস্তা থেকেই এমন শিক্ষা পেয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনে সেটাই করেছেন পুতিন।
আইন শাস্ত্র পড়াশোনা করা পুতিন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শেষ করেই তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবিতে যোগ দেন। øায়ুযুদ্ধের সময় তিনি তৎকালীন পূর্ব জার্মানিতে কেজিবির গোয়েন্দা হিসাবে কাজ করেন। ১৯৯৭ সালে বরিস ইয়েলেৎসিন যখন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট তখন ভ্লাদিমির পুতিন ক্রেমলিনে আসেন এবং তাকে কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সার্ভিসের প্রধান হিসাবে নিয়োগ করা হয়। কেজিবির পরবর্তী সময়ে এ সংস্থাটি গঠন করা হয়েছিল।
১৯৯৯ সালে নতুন বছরের শুরুতে ইয়েলেৎসিন প্রেসিডেন্টের পদ সরে দাঁড়ান এবং ভ্লাদিমির পুতিনকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসাবে ঘোষণা করেন। ২০০০ সালের মার্চ মাসের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হেসেখেলে জয়লাভ করেন তিনি।
২০১৮ সালে চতুর্থবারের মতো রাশিয়ার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সময়ই তিনি বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন-নিজের দেশকে আবার পরাশক্তি হিসাবে গড়ে তুলতে চান। আমেরিকা এবং ইউরোপের নেতাদের হুমকি-ধামকিকে ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়ে ঠিকই আক্রমণ করে বসলেন ইউক্রেনে।