২০২৫ সালের রমজানে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে তারাবির নামাজ ১০ রাকআত পড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হারামাইন শরিফাইন কর্তৃপক্ষ।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) দুই পবিত্র মসজিদ বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সির সভাপতি শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস এ ঘোষণা দেন বলে জানিয়েছে ইনসাইড দ্যা হারামাইন।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার রমজানে ৫ সালামে ১০ রাকআত তারাবির নামাজ আদায় করা হবে। পূর্ববর্তী বছরগুলোতে করোনার কারণে তারাবির রাকাত সংখ্যা কমানো হয়েছিল। তবে ২০২৫ সালে এ সিদ্ধান্ত বহাল থাকলেও এর নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি। ১০ রাকআত তারাবির পর তিন রাকআত বিতির নামাজও পড়া হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।
জানা যায়, করোনাভাইরাস মহামারির পর থেকে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে ১০ রাকআত তারাবির নামাজ চালু রাখার মূল কারণ হলো স্বাস্থ্যবিধি ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করা।
কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০২০ সালে মহামারির সময় নামাজে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে তারাবির রাকাত সংখ্যা কমিয়ে ২০ থেকে ১০ করা হয়। এই নিয়ম পরে স্থায়ী করা হয়। কম সময়ের নামাজের ফলে মসজিদ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা ও জনসমাগম নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হয়।
এছাড়াও মুসল্লিদের ক্লান্তি কমানো ও বেশি সংখ্যক মানুষকে নামাজ আদায়ের সুযোগ দেয়ার জন্যও ১০ রাকআত পদ্ধতি অব্যাহত রাখা হয়েছে। মসজিদে হারাম ও মসজিদে নববীতে প্রতিদিন প্রচুর ওমরাহ পালনকারী আসেন। ১০ রাকআত তারাবির ফলে ওমরাহ ও নামাজ দুইটিই সহজভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হয় বলে মনে করে কর্তৃপক্ষ। যদিও করোনা মহামারির অবস্থা নিয়ন্ত্রণে এসেছে, তারপরও মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববীতে এই নিয়ম বজায় রাখা হয়েছে।
মদিনায় তায়্যিবাহর মাঝে হজরত ওমর রা. হজরত উসমান রা., হযরত আলী রা. এর শাসনামলে ২০ রাকআত তারাবি পড়া হতো। করোনার আগ পর্যন্ত ১৫০০ বছর ধরে ২০ রাকআতই পড়ে আসছে। করোনাকালীন সময়ে ১০ রাকআত করা হয় মহামারীর জন্য। বর্তমানে তারা মানুষের ভিড় বেড়ে যাওয়াও ওমরাহ পালনকারীদের ইবাদতে সমস্যা হওয়ার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যেন বহু দেশ থেকে আগত ওমরাহ পালনকারীরা অন্যান্য ইবাদ করতে পারেন। তবে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের এ ধরনের সমস্যার দোহায় দিয়ে তারাবির নামাজ ২০ রাকআত থেকে কমানোর সুযোগ নেই। কারণ সাহাবায়ে কেরাম সবসময়ই ২০ রাকআত তারাবিই আদায় করেছেন। হজরত আয়শা রা. সেসময় মদিনাা মুনাওয়ারায় অবস্থান করতেন।
তিনিই নবীজির এ ফরমান বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার দীনের মাঝে বেদআত বের করবে, তার কাজটি পরিত্যাজ্য। যদি ২০ রাকআত তারাবির নামাজ বিদআত ও নাজায়েজ হতো, তাহলে হজরত আয়শা রা. বছরের পর বছর এর ওপর চুপ করে বসে থাকতেন না।