প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির ওপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভালোবাসা ফরজ বা অত্যাবশ্যক। রাসূলের প্রতি ভালোবাসা ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ।
একজন মুসলিমের কর্তব্য হলো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিজের জীবনের চেয়েও অধিক ভালোবাসা। তবে এ ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ অবশ্যই রাসূলুল্লাহর অনুমোদিত ও সাহাবাগণের প্রদর্শিত পদ্ধতিতে হতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বাড়াবাড়ি বা ছাড়াছাড়ির সুযোগ ইসলামে নেই।
হাদিসে এসেছে, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত পরিপূর্ণ ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি রাসূলুল্লাহ তোমাদের নিকট তোমাদের পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও দুনিয়ার সব মানুষের চেয়ে অধিকতর প্রিয় হবো।’ (বুখারি, হাদিস, ১৫)।
মানবজাতির পাথেয় হিসেবে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুন্নাহ বা কর্মপন্থা রেখে গিয়েছেন, যা অনুসরণের মাধ্যমে মানুষের জন্য সফলতা রয়েছে।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা অনুসরণ করে রাসূলের, যে উম্মী নবী; যার গুণাবলী তারা নিজদের কাছে তাওরাত ও ইঞ্জিলে লিখিত পায়, যে তাদেরকে সৎ কাজের আদেশ দেয় ও বারণ করে অসৎ কাজ থেকে এবং তাদের জন্য পবিত্র বস্তু হালাল করে আর অপবিত্র বস্তু হারাম করে। আর তাদের থেকে বোঝা ও শৃঙ্খল যা তাদের উপরে ছিল- অপসারণ করে। সুতরাং যারা তার প্রতি ঈমান আনে, তাকে সম্মান করে, তাকে সাহায্য করে এবং তার সাথে যে নূর নাজিল করা হয়েছে তা অনুসরণ করে তারাই সফলকাম’ (সূরা আল আরাফ, আয়াত, ১৫৭)।
অন্য আয়াতে এসেছে, বলো, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর আল্লাহ অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু (সূরা আলে ইমরান, আয়াত, ৩১)।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করতে হলে অবশ্যই তার আনুগত্য করতে হবে। কোনো বিষয়ে মতবিরোধ হলে তা সমাধানের জন্য তার আদর্শের শরণাপন্ন হতে হবে।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে মুমিনগণ, তোমরা আনুগত্য করো আল্লাহর ও আনুগত্য করো রাসূলের এবং তোমাদের মধ্য থেকে কর্তৃত্বের অধিকারীদের। অতঃপর কোনো বিষয়ে যদি তোমরা মতবিরোধ করো তাহলে তা আল্লাহ ও রাসূলের দিকে প্রত্যার্পণ করাও যদি তোমরা আল্লাহ ও শেষ দিনের প্রতি ঈমান রাখো। এটি উত্তম এবং পরিণামে উৎকৃষ্টতর’ (সূরা আন নিসা, আয়াত, ৫৯)।
অন্যত্র এসেছে, ‘আর আমি যেকোনো রাসূল প্রেরণ করেছি তা শুধু এ জন্য, যেন আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাদের আনুগত্য করা হয়’ (সূরা আন নিসা, আয়াত, ৬৪)। শুধু তাই নয়, তার আনুগত্য এর মধ্যেই রয়েছে জান্নাত লাভ।