মাওলানা ফরিদপুরী রহ. এর খলিফা রোজাদার হুজুরের ইন্তেকাল

দক্ষিন অঞ্চলের প্রবীণ আলেম,আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী (ছদর ছাহেব) রহ. এর শাগরীদ ও খলিফা, তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের অন্যতম মুরুব্বী লাখো আলেমের উস্তাদ শাইখুল হাদীস আল্লামা মহিউদ্দীন রোজাদার হুজুর  আজ বেলা ১২ টায় ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন।

মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিলো ৮৮ বছর। তিনি ৪ ছেলে, ৩ মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন শাইখুল হাদীস আল্লামা আজীজুল হক রহ. এর বড় সাহেবজাদা মুহতারাম মাহমুদুল হক, বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বেফাকের মহাসচিব আল্লামা মাহফুজুল হক, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম মুফতি রুহুল আমিন, নায়েবে মুহতামিম মুফতি উসামা আমিন, ক‌ওমি মাদরাসা পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি ও গুলিস্তান পীর ইয়ামেনী জামে মসজিদের খতিব মুফতি ইমরানুল বারী সিরাজী,হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক নওমুসলিম মুহাম্মাদ রাজ প্রমুখ।

তিনি হিজরি ১৩৫৭, বাংলা ১৩৪৫, ১৯৩৮ ইংরেজিতে নড়াইল জেলার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।

পঞ্চম শ্রেণী শেষ করে নিজের থেকেই মাদরাসায় পড়ার আগ্রহের কথা মাকে জানান। এরপর চলে যান বাগেরহাটের দাড়িয়ালা মাদরাসায়। সেখানে কিছুদিন পড়ার পরে ভর্তি হন ঐতিহ্যবাহী জামিয়া ইসলামিয়া খাদেমুল ইসলাম গওহরডাঙ্গা মাদরাসায়। যুগ শ্রেষ্ঠ কামেল ওলি ও উলামায়ে কেরামের সোহবতে থেকে ১৯৬৫ সালে দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি তিনি যশোর এম এম কলেজ থেকে কৃতিত্বের সাথে তৎকালীন আই এ (ইন্টারমিডিয়েট) সম্পন্ন করেন।

সে বছরই তিনি সদর সাহেব হুজুর রহ. এর পরামর্শে দাড়িয়ালা মাদরাসায় হাদীস পড়ানো শুরু করেন। উল্লেখ্য যে ছাত্রজীবনে তিনি সদর সাহেব হুজুরের একান্ত খেদমতের সৌভাগ্য লাভ করেন। তাঁর সাথী ও সমসাময়ীকদের থেকে জানা যায় যে মুজাহিদে আজম আল্লামা শামসুল হক ফরিদপুরী সদর সাহেব হুজুর রহ. তাকে ইজাজাত বা খেলাফাত দিয়েছেন,কিন্তু তিনি বিনয়ের কারণে বারবার বলেন আমি।সেটার যোগ্য কখনোই ছিলাম না। হুজুরের আদর্শ বাস্তবায়নে দ্বীনের কাজ করে যাওয়াই আমার লক্ষ্য।

তিনি কেশবপুর সরকারী আলীয়ার হেড মুহাদ্দিস হিসেবে দরস করেছেন দীর্ঘদিন। যশোর রেলস্টেশন মাদরাসা, চন্দ্রদীঘলিয়া মাদরাসা, ফরিদপুরের ঐতিহাসিক শামসুল উলুম খাবাশপুর মাদরাসা,বড়গুণী মাদরাসা সহ বহু মাদরাসার শাইখুল হাদীস হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন।

দাওয়াত ও তাবলীগের কাজে নিজেকে উৎসর্গ করে দেয়া এ বুজুর্গ ষাটের দশক থেকে সারাবছর রোজা রাখেন বলে রোজাদার হুজুর নামেই অধিক পরিচিত। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি পায়ে হেঁটে যেতেন মসজিদে। ছুটে বেড়াতেন মাদরাসা থেকে মাদরাসা,মারকাজ থেকে মারকাজ।

অনেক বুজুর্গ তাকে খেলাফত দিলেও তিনি নিজের মতোই তা লুকিয়ে রাখতেন। নিভৃতচারী এ মহান আলেম, দায়ী সারাক্ষণই জিকির,দ্বীনি আলোচনা আর তেলাওয়াতে থাকতেন।

মৃত্যুর দুই বছর আগে তিনি ৮৫ বছর বয়সে হাফেজ হন।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

শিশুকে বদ নজর থেকে বাঁচানোর দোয়া

নূর নিউজ

১৫০ শিক্ষার্থীকে আরবি ভাষা শেখাবে সৌদি আরব

নূর নিউজ

শুক্রবারও চলছে টিকাদান, ভিড় বেড়েছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে

নূর নিউজ