মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
আজ মানবসভ্যতার চরম শত্রু হয়ে দাড়িয়েছে মাদক। মাদকের ভয়াল থাবায় আজ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে দেশের সকল স্থরের মানুষ। বাদ যাচ্ছে না উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীরা ও।তছনছ হয়ে যাচ্ছে অসংখ্য পরিবার। চুরি, ডাকাতি, হত্যা,ধর্ষন, সহ সকল কিছু ই হচ্ছে মাদকের জন্য।মাদকসেবীরা তাদের অর্থ জোগান দিতে এমন কোন অন্যায় ও গর্হিত কাজ নেই যে,তারা করছেনা।
আমরা মুসলমান। আমাদের ধর্ম ইসলাম। আর ইসলাম হচ্ছে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম। তাই আমাদের উচিৎ ইসলাম কি বলে সে অনুযায়ী নিজেদের জীবন পরিচালনা করা। আর এটাই ঈমানের দাবি।
ইসলাম মানব কল্যাণময় এক ধর্ম। আজকের পৃথিবীতে মাদকের ছড়াছড়িতে নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে মানব সভ্যতা।মানবসভ্যতাকে সংরক্ষণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে আজ থেকে চৌদ্দশত বৎসর পূর্বে ই ইসলাম মাদকের কুফল সম্পর্কে স্পষ্ট ঘোষণা প্রদান করেছে।
মাদকদ্রব্যের আরবি প্রতিশব্দ হচ্ছে ‘খমর ‘। যেসমস্ত বস্তু সেবনের ফলে মাদকতা সৃষ্টি হয় এবং বুদ্ধিকে আচ্ছন্ন করে ফেলে অথবা বিবেকবোধ শক্তির উপর ক্ষতিকর প্রভাব বিস্তার করে তাকে ইসলামের ভাষায় ‘ খমর’ বা মাদক বলা হয়।
মহাগ্রন্থ আলকোরআনে আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, হে মুমিনগণ! এইযে মদ,জুয়া এবং ভাগ্যনির্ধারক শর সমুহ (তৎকালীন প্রচলিত একধরণের জুয়া) এসবকিছু শয়তানের কাজ বৈ অন্যকিছু নয়।অতএব এগুলো থেকে দূরে থাকো। যাতে তোমরা কল্যাণ প্রাপ্ত হও।(সুরা মায়িদা,আয়াত- ৯০)।
উক্ত আয়াতে মাদক সংশ্লিষ্ট সকল সকল কিছুকে শয়তানের জঘন্য কাজ বলা হয়েছে।
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা:) হতে বর্ণীত হাদিসে মাদকাসক্তদের প্রতি কঠোর ভৎসনা করে রাসুল(সা:)এরশাদ করেন, যদি কেউ মদ পান করে আল্লাহ তায়ালা তার চল্লিশ দিনের নামাজ কবুল করেননা। আর মদ্যপ অবস্থায় সে মৃত্যুবরন করে তবে সে চিরস্থায়ী জাহান্নামি হবে।
অন্যএক হাদিসে রাসুল(সা:)বলেছেন, মদ সকল অশ্লীলতার মূল ও মারাত্মক কবিরা গোনাহ যা ক্ষমার অযোগ্য। যতক্ষণ না সে তার কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তাওবা না করে ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ তায়ালা তাকে ক্ষমা করবেননা।
হজরত ইবনে ওমর (রা:) থেকে বর্ণীত রাসুল(সা:)এরশাদ করেছেন,সকল নেশা জাতীয় দ্রব্য ই খমর তথা মদের অন্তর্ভুক্ত।আর সবধরনের মাদক ই হারাম।(মুসলিম শরিফ)।
মাদকসেবীদের মাদকাসক্তি থেকে বিরত রাখতে অনেককিছু ই করা হচ্ছে আজ। কিন্তু মাদকাসক্তির সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে লাগামহীন ভাবে। যতোকিছু ই করা হউক না কেন, যতক্ষণ পর্যন্ত মাদকসেবীদের অন্তরে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করা না যায় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের মাদক থেকে দূরে আনা যাবেনা। আর আল্লাহর ভয় তখনি সৃষ্টি হবে যখন ইসলামী শিক্ষা চর্চার মাধ্যমে নিজেকে এবংনিজের দায়িত্ব কর্তব্য বুঝতে পারবে এবং নিজের প্রভুর পরিচয় লাভ করতে পারবে। সুতরাং মাদককে চির নির্মুল করতে প্রয়োজন মাদকসেবীদের ইসলামী শিক্ষার আলোকে আলোকিত করা।
লেখক
মুফতী মোহাম্মদ এনামুল হাসান
যুগ্ম সম্পাদক সম্পাদক
ইসলামী ঐক্যজোটব্রা
ক্ষণবাড়ীয়া জেলা।