মানুষকে প্রধানত কথা ও কাজের মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া হয়ে থাকে। কথার মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া বলতে গালি দেওয়া, গীবত, চোগলখুরী করা, খোঁটা দেওয়া, তুচ্ছ জ্ঞান করা ইত্যাদি বোঝায়। আর কাজের মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া বলতে জুলুম করা, ধোঁকা-প্রতারণা, রাস্তা বন্ধ করা, সম্পদ জবর দখল করা ও হত্যা করা ইত্যাদি বুঝায়।
আঘাতের ক্ষত ও ব্যথা দ্রুত সেরে যায়। কিন্তু কথার মাধ্যমে দেওয়া আঘাত ও ক্ষতের নিরাময় সহজে হয় না। এ কারণে কবি বলেছেন,
جِرَاحَاتُ السِّنَانِ لَهَا الْتِئَامُ * وَلاَ يَلْتَامُ مَا جَرَحَ اللِّسَانُ
‘তরবারির আঘাতের ক্ষতের প্রতিষেধক আছে, কিন্তু জিহ্বার ক্ষতের কোন প্রতিষেধক নেই’। (তুহফাতুল আহওয়াযী ৭/১৭৩; মিরকাত ৩/৫৯)
মানুষকে গালির মাধ্যমে কষ্ট দেওয়া কবীরা গুনাহ এবং নিজেকে ধ্বংসে নিপতিত করার মতো। পরকালে এর প্রতিকার হবে নেকী প্রদান বা গুনাহ বহনের মাধ্যমে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘মুসলিমকে গালি দেয়া ফাসিকী এবং তার সাথে লড়াই করা কুফরী’। (বুখারী, হাদিস, ৪৮, ৬০৪৪, ৭০৭৬; মুসলিম হাদিস, ৬৪; মিশকাত হাদিস, ৪৮১৪)
কোন মুসলিমকে গালি দিলে শয়তানকে সহযোগিতা করা হয়। আবূ হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মদ পানকারী জনৈক ব্যক্তিকে নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপস্থিত করা হলো। তিনি আদেশ দিলেন, তোমরা তাকে মার। আবু হুরায়রা রা. বলেন, (তাঁর আদেশ অনুযায়ী আমরা তাকে মারতে আরম্ভ করলাম।) আমাদের কেউ তাকে হাত দিয়ে মারতে লাগল, কেউ তার জুতা দিয়ে, কেউ নিজ কাপড় দিয়ে।
এরপর যখন সে ফিরে যেতে লাগল, তখন কিছু লোক বলে উঠল, আল্লাহ তোমাকে লাঞ্ছিত করুক। একথা শুনে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘এভাবে বলো না এবং তার বিরুদ্ধে শয়তানকে সহযোগিতা করো না’। (বুখারী হাদিস, ৬৭৭৭; আবু দাউদ, হাদিস ৪৪৭৭; মিশকাত হাদিস, ৩৬২৬)