বাংলাদেশের সীমান্তে মিয়ানমার বাহিনীর অব্যাহত মর্টর শেল ও গোলাবর্ষণের কারণে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন শূন্যরেখা বসবাস করা রোহিঙ্গারা।
সোমবার শূন্যরেখার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের চেয়ারম্যান দিল মোহাম্মদ জাতিসংঘের কাছে চিঠিটি পাঠান।
জাতিসংঘের কাছে চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ বলেন, ২০১৭ সালে সামরিক জান্তা আট লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের জন্মভূমি থেকে বিতাড়িত করেছে। আমরা চিঠিতে জাতিসংঘকে জানিয়েছি— সামরিক জান্তা বাহিনী যে কোনো মুহূর্তে আমাদের ওপর আরও বড় আক্রমণ করতে পারে।
চিঠিতে এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতিসংঘকে শূন্যরেখার আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান করা হয়েছে বলে জানান দিল মোহাম্মদ। এ চিঠি জাতিসংঘ ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোতে পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
এর আগে সোমবার বিকালে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের তুমব্রু জিরোপয়েন্টের অস্থায়ী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দারা মর্টার শেল হামলার নিন্দা জানিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন রোহিঙ্গারা।
এ সময় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে সেখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের অংশগ্রহণে ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে মর্টার শেল হামলায় রোহিঙ্গা কিশোর ইকবাল হত্যার প্রতিবাদ জানানো হয়।
সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতারা বলেন, শুরুর দিকে মিয়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে দেশটির সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) গোলাগুলি-সংঘর্ষ শুরু হলেও এখন তুমব্রু সীমান্তে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী পুলিশ গোলাগুলি করে পরিস্থিতি অশান্ত করছে।
এ অবস্থায় আতঙ্কে দিন কাটাতে হচ্ছে ৬২১টি পরিবারের চার হাজারের বেশি রোহিঙ্গাকে, যারা গত পাঁচ বছর ধরে সেখানে বসবাস করছে।
সমাবেশে রোহিঙ্গা নেতা আব্দুর রহিম বলেন, গত শুক্রবার রাতে শূন্যরেখায় পরিকল্পিতভাবে মর্টার শেল হামলা চালিয়েছেন মিয়ানমারের মিলিটারিরা। তারা চায় আমরা এখান থেকে সরে যাই, আমরা যাব না। যদি যেতেই হয় শূন্যরেখায় রোহিঙ্গারা হেঁটে পাহাড়ের অপর প্রান্তে রাখাইনে নিজেদের ভিটায় ফিরবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
প্রসঙ্গত গত জুলাই থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সে দেশের বিদ্রোহী সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির মধ্যে চলা সংঘাতে অস্থির হয়ে উঠেছে রাখাইন রাজ্য।
সংঘাতের প্রভাবে আতঙ্ক ছড়িয়েছে বাংলাদেশের সীমান্ত অঞ্চলে, তিন দফায় মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা মর্টার শেল পতিত হয়েছে ঘুমধুমে। সর্বশেষ এক রোহিঙ্গা নিহত ও ৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় উৎকণ্ঠা বেড়েছে সীমান্ত এলাকায়।