নিজস্ব প্রতিবেদক, নূর নিউজ
এবার কওমি মাদ্রাসার তরুণদের দিয়ে বিজ্ঞাপন করাচ্ছে মি. নুডুলস। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি গ্রাফিক্স কার্ডে কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের ছবি ব্যবহার করে নুডুলসের বিজ্ঞাপন করতে দেখা গেছে। ছবিটিতে দেখা যায়, কওমি মাদ্রাসার ছাত্ররা হাস্যজ্জল মুখে মি. নুডুলস খাচ্ছেন।
ছবিটিতে মোটাদাগে লেখা ছিল, ‘রহমতের মাসে এতিমদের ভালোবেসে’। তার নিচের লাইনে কিছুটা ছোট অক্ষরে বিজ্ঞাপনটিতে লেখা হয়েছে, “এবারের পবিত্র মাহে রমজান মি. নুডুলস এর উদ্যোগে দেশজুড়ে বিভিন্ন এতিমখানায় ইফতারের আয়োজন করা হচ্ছে।”
সাম্প্রতিক সময়ে মাদরাসার ছাত্রদের বিজ্ঞাপনে মডেল হিসেবে উপস্থিত করতে দেখা গেছে এরকম আরো কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে। বিষয়টি কিভাবে দেখছেন চিন্তাশীল আলেমগণ? -তা জানতেই আমাদের আজকের এই প্রতিবেদন।
কাতার ধর্ম মন্ত্রনালয়ের ইমাম ও আল নুর কালচারাল সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মাওলানা ইউসুফ নূর বলেন, বিষয়টি যেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা ইতিবাচক নয়। কওমি ছাত্রদের বিজ্ঞাপনে এতিম হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি সঠিক নয়। কওমি মাদ্রাসা একটি সার্বজনীন প্রতিষ্ঠান। ধনী-গরীবের কোন অন্তরায় এখানে নেই। বর্তমান সময়ে অসংখ্য ধনী পরিবারের সন্তান কওমি মাদরাসায় পড়ে। অথচ বিজ্ঞাপনে কওমি ছাত্রদের দেখানো হয়েছে এতিম হিসেবে। এটা ইতিবাচক নয়।
তিনি আরও বলেন, বিজ্ঞাপনে কওমি ছাত্রদের অংশগ্রহণ আমি খুব সুখকর বলে মনে করি না।
মিশরের আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মুয়াদালা করে আলোচনায় থাকা ঢাকার দারুল আরকাম আল ইসলামিয়ার প্রিন্সিপাল শায়েখ সানাউল্লাহ আযহারী বলেন, কওমি মাদ্রাসার শুধুমাত্র দরিদ্র শিক্ষার্থীরা পড়াশোনা করে না। ক্ষুদ্র একটি অংশ আছে যারা দরিদ্র। এই বিজ্ঞাপনে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে অবমাননা করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই নেতিবাচক এবং অগ্রহণযোগ্য।
তিনি আরো বলেন, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষা ব্যবস্থাকে আমাদের আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যাতে সমাজের এলিট শ্রেণীর মানুষের কাছে এই বার্তা পৌঁছে যে, কওমি মাদ্রাসার শুধু দরিদ্র নন অনেক উচ্চবিত্ত মানুষের সন্তানরাও শিক্ষা লাভ করে।
“কওমি শিক্ষার্থীদেরকে দিয়ে এভাবে বিজ্ঞাপন করানোটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা সম্মানজনক বিজ্ঞাপন নয় বরং লাঞ্ছনা কর। আশা করি আগামীতে এই বিষয়টি লক্ষ্য রাখা হবে” যোগ করেন শায়েখ সানাউল্লাহ আজহারী।