সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবিলায় সরকার সবদিক থেকে প্রস্তুত আছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
বুধবার (১০ মে) বিকেলে সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে ঘূর্ণিঝড় ইস্যুতে অনুষ্ঠিত এক সভার শুরুতে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সবদিক থেকেই প্রস্তুত আছি। প্রতিবারের মতো ইনশাল্লাহ এবারও ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলা করতে পারব। সেনা, নৌ, কোস্টগার্ড প্রস্তুত আছে।
তিনি জানান, এটা সুপার সাইক্লোন হবে, এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এটি ১৩ মে রাত থেকে ১৪ মে সকালের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। বাংলাদেশের কক্সবাজারে এটি আঘাত হানতে পারে। বিশেষ করে সেন্ট মার্টিনের নিচু এলাকায় আঘাত হানতে পারে। রোহিঙ্গাদের বসতির ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার একটা আশঙ্কা আছে।
তিনি বলেন, আমরা কয়েকদিন থেকেই শুনতে পাচ্ছিলাম যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হবে, যেটি বাংলাদেশে আঘাত হানার শঙ্কা রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় এটি নিম্নচাপে রূপান্তরিত হয়েছে, এখন এটি সুস্পষ্ট নিম্নচাপ অবস্থায় আছে। আগামীকালে ঘূর্ণিঝড়ে রূপান্তরিত হতে পারে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া বিভাগ এই পূর্বাভাস দিয়েছে।
‘তাদের দেওয়া প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে আমরা দেখেছি, এটি এখন উত্তর-পশ্চিম দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূল থেকে এখনো গড়ে প্রায় এক হাজার ৫০০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছে। এটি ১৩ মে নাগাদ উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নেবে এবং কক্সবাজার জেলা ও মিয়ানমারের ওপর দিয়ে আঘাত হানবে। আঘাতের সময় এটির গতিবেগ ধারণা করা হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ কিলোমিটার। এই পূর্বাভাস অনুসারে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। কক্সবাজার ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি,’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী বিষয়ক কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। যেহেতু রোহিঙ্গা নাগরিকরা টেকনাফে অবস্থান করছে, সেহেতু সেখানকার কমিশনারকে বলা হয়েছে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকলীয় আশ্রয় কেন্দ্রগুলোকে প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে খাওয়ার জন্য ১৪ টন ড্রাই কেক ও টোস্ট বিস্কুট পাঠিয়ে দিয়েছি। আগামীকালের মধ্যে আরও ২০০ টন চাল চলে যাবে। চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলায় ১০ লাখ করে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুধবারের তৃতীয় বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নিম্নচাপটি আজ দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫১৫ কি.মি. দক্ষিণে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৪৩৫ কি.মি. দক্ষিণে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৫১০ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১৪৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘণীভূত হয়ে আগামীকাল পর্যন্ত উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে এবং পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।
এতে আরও বলা হয়েছে, গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৮ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কি.মি., যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ৬০ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে৷