যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর পোলিও নিয়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন। ভাইরাসটি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়ার প্রমাণ পাওয়ার পর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, নিউইয়র্ক সিটি এবং চারটি সংলগ্ন কাউন্টিতে বর্জ্য পানির নমুনা পরীক্ষায় পোলিও ভাইরাস ধরা পড়েছে। এ ভাইরাস পক্ষাঘাত ঘটিয়ে মানুষকে পঙ্গু করে দিতে পারে।
নিউইয়র্কে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি সংক্রমণের ঘটনা নিশ্চিত করা হয়েছে। তবে এটি প্রায় এক দশকের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম সংক্রমণ বলে এ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
এর আগে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের গভর্নর ক্যাথি হোকুল করোনাভাইরাস মহামারি এবং মাঙ্কিপক্সের প্রতিক্রিয়ায় অনুরূপ আদেশ জারি করেছিলেন। সে হিসেবে শুক্রবার জারি করা আদেশটি এ বছর এ অঙ্গরাজ্যে তৃতীয় জরুরি অবস্থা।
এ ঘোষণা জরুরি চিকিৎসাকর্মী, ধাত্রী (মিডওয়াইফ) এবং ফার্মাসিস্টদের পোলিও টিকা সরবরাহকারীদের নেটওয়ার্কে যোগদানে সক্ষম করবে।
১৯৫৫ সালে শুরু হওয়া টিকা কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পোলিও নির্মূল হয়েছিল। ১৯৭৯ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রকে পোলিওমুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল।
নিউইয়র্কের কর্মকর্তাদের মতে, অঙ্গরাজ্যের কিছু অংশে টিকা দেওয়ার হার খুবই কম। শুক্রবারের জরুরি অবস্থা ঘোষণার লক্ষ্য হলো টিকাদানের হার বাড়ানো।
পোলিওর কোনো নিরাময় নেই, তবে টিকার মাধ্যমে এটি প্রতিরোধ করা যায়। পোলিও ভাইরাস বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের আক্রমণ করে। ভাইরাসটি সাধারণত পেশির দুর্বলতা এবং পক্ষাঘাত সৃষ্টি করে। সবচেয়ে গুরুতর ক্ষেত্রে স্থায়ী শারীরিক অক্ষমতা এমনকি মৃত্যু ঘটায়।
নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ বলেছে, এটি বর্তমান অঙ্গরাজ্যব্যাপী টিকাদানের হার বাড়িয়ে এখনকার গড় প্রায় ৭৯% থেকে ৯০% এর উপরে নিতে চাইছে।
স্বাস্থ্য কমিশনার ড. মেরি ব্যাসেট এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘পোলিও নিয়ে আমরা জুয়া খেলতে পারি না।…আপনি বা আপনার সন্তান যদি টিকা না পেয়ে থাকেন বা ডোজ শেষ না করে থাকেন তাহলে পক্ষাঘাতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার গুরুতর ঝুঁকি রয়েছে।’
কমিশনার আরও বলেন, ‘প্যারালাইটিক পোলিওর প্রতিটি সংক্রমণের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আরো কয়েক শ লোক সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারে।’
নাসাউ, অরেঞ্জ ও সুলিভান কাউন্টি এবং নিউইয়র্ক সিটির পাঁচটি বরোর বর্জ্য পানির নমুনায় প্যারালাইটিক পোলিও ভাইরাস পাওয়া গেছে। সূত্র: বিবিসি