মাত্রার চেয়ে বেশি মাদক গ্রহণ করায় এক বছরে যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ে মারা গেছেন এক লাখ সাত হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিক।
মার্কিন স্বাস্থ্য খাত নিয়ে কাজ করা ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের (সিডিসি) ধারণা অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বেশি মাত্রায় মাদক নেয়া এক ধরনের মহামারিতে পরিণত হয়েছে এবং এ কারণে আরো একটি দুঃখজনক রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। বুধবার মার্কিন সংস্থাটির পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
সিডিসির অনুমান মোতাবেক ২০২১ সালের তুলনায় এ বছর মৃত্যুর হার ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন ব্যক্তির ‘ডেথ সার্টিফিকেট’ পর্যালোচনা করে সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে এমন মন্তব্য করেছে। খবর আল জাজিরার
মাদকের অপব্যবহারের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডা. নোরা ভলকো বলেন, বেশি মাত্রায় মাদক গ্রহণ করে অসংখ্য ব্যক্তির মৃত্যুর বিষয়টি সত্যিই বিস্ময়কর।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দফতর হোয়াইট হাউজ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে মাত্রাতিরিক্ত মাদক গ্রহণের জন্য যেভাবে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে তা অগ্রহণযোগ্য। জাতীয় পর্যায়ে মাদকের অপব্যবহার রোধ করতে একটি কৌশলও অবলম্বন করার কথা জানিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। মৃত্যুর সংখ্যা কমাতে আরো বেশি সংখ্যক মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসা দেয়ার জন্যও আহ্বান জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ। এছাড়া মাদক পাচার ব্যাহত করা এবং মাদকের ওভারডোজ সংক্রান্ত চিকিৎসার ক্ষেত্রে ন্যালোক্সোন ওষুধ ব্যবহার প্রসারিত করার বিষয়ে বলা হয়েছে।
২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মাদকের ওভারডোজের কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ব্যাপক হারে বেড়েছে। ১৯৯০ সাল থেকে আফিমের তৈরি ব্যথানাশক ওষুধের (বা মাদকের) মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার শুরু হয়েছিল। এরপর আফিম থেকে প্রস্তুত হেরোইন ও অন্যান্য মাদক ব্যবহার শুরু হয়। অতি সম্প্রতি – অবৈধ ফেন্টানাইল ও আফিমজাত মাদক বেশি মাত্রায় গ্রহণ করার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে বিপুল সংখ্যক মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
গত বছর, ফেন্টানাইল ও অন্যান্য সিনথেটিক আফিমজাত মাদক অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহারের কারণে ৭১ হাজারের বেশি মার্কিন নাগরিক মারা গেছেন, যা আগের বছরের তুলনায় ২৩ শতাংশ বেশি। কোকেনের কারণে মৃত্যুর হার বেড়েছে ২৩ শতাংশ। এছাড়া মেথ ও অন্যান্য (তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টিকারী) মাদকের কারণে মৃত্যুর হার বেড়েছে ৩৪ শতাংশ।