অজানাকে জানার আগ্রহ মানুষের আজন্ম। শুধু অজানাকে জেনেই শেষ হয় না আগ্রহ, জানা বিষয়কেই আরও বিশদভাবে জেনে, বিশ্লেষণ করে দেখার আগ্রহ তৈরি হয় মানুষের মাঝে। বর্তমানে জানা-শোনার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে সংবাদ বা গণমাধ্যম।
মানুষের কল্যাণে সংবাদ প্রকাশ এবং কোনও বিষয়ে মানুষকে জানিয়ে দেওয়া সওয়াবের কাজ। আল্লাহ বলেন, ‘যারা ঈমান আনে এবং ভালো কাজ করে তাদের আপ্যায়নের জন্য আছে ফেরদাউসের বাগান।’ (সুরা কাহাফ, আয়াত : ১০৭)
হাদিসে ভালো কথাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তির মাধ্যম বলা হয়েছে। আদি বিন হাতিম (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমরা এক টুকরা খেজুরের বিনিময়ে হলেও আগুন থেকে নিজেকে রক্ষা কোরো। খেজুরের টুকরা না পেলে তাহলে ভালো কথার মাধ্যমে নিজেকে রক্ষা কোরো।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩৫৯)
সংবাদ প্রচারের ক্ষেত্রে অনেক সময় তথ্য যাচাই ও মিথ্যা সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার মতো ব্যাপার দেখা যায়, যা পুরোপুরি ইসলামের নীতি ও আদর্শের সঙ্গে সাংর্ঘষিক।
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে মুমিনরা, তোমাদের কাছে কোনো পাপাচারী ব্যক্তি সংবাদ নিয়ে এলে তোমরা তা যাচাই-বাছাই কোরো, যাতে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতি না করো এবং পরবর্তী সময়ে যেন নিজেদের কাজের জন্য তোমরা অনুতপ্ত না হও।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ৬)
মিথ্যা সংবাদ পরিবেশনসহ যেকোনো বিষয়ে মিথ্যার আশ্রয় নেওয়া গুরুতর পাপ। মানুষের কাছে সত্যকে মিথ্যা বলে প্রচার করা এবং মিথ্যাকে সত্য বলে বেড়ানো ভয়াবহ অপরাধ।
হজরত আবু বাকরা (রা.) বর্ণনা করেছেন, একদিন আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে বসা ছিলাম। তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদের সবচেয়ে বড় পাপ সম্পর্কে জানাব না?’ রাসুল (সা.) কথাটি তিনবার বলেছেন। (সাহাবিরা সম্মতিসূচক কথা বলার পর)
তিনি বলেন, ‘আল্লাহর সঙ্গে শরিক করা, বাবা-মায়ের অবাধ্য হওয়া এবং মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া বা মিথ্যা কথা বলা।’
রাসুল (সা.) কথাগুলো বলার সময় হেলান দেওয়া ছিলেন। অতঃপর সোজা হয়ে বসে তা অনেকবার বলতে থাকেন। আমরা মনে মনে বলছিলাম, আহ, তিনি যদি চুপ হতেন।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ২৫১০)