|| তাসনিফ আবীদ ||
‘কাফিয়া’ জামাতের সমাপনী পরীক্ষা বেফাকে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি বেশ কয়েকবছর ধরেই কওমি অঙ্গনে আলোচিত ছিল। অবশেষে কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড বেফাক সিদ্ধান্ত জানিয়েছে, ‘১৪৪৬ হিজরি সনে অনুষ্ঠিতব্য বেফাকের ৪৮তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় যুক্ত হবে সানাবিয়্যাহ-২ (কাফিয়া) জামাতের সমাপনী পরীক্ষা।
বোর্ডটির এই সিদ্ধান্ত প্রকাশের পর থেকেই অনলাইন-অফলাইনে বিষয় নিয়ে তীব্র আলোচনা ও সমালোচনা চলছে। কেউ কেউ এই বোর্ড পরীক্ষার বিরোধিতা করছেন। কেউ আবার এর প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছেন। কিন্তু বেফাক কেন এই সমাপনী পরীক্ষাকে তাদের তালিকায় যুক্ত করলো? এ বিষয়ে জানতে চেয়েছিলাম বোর্ডের মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের কাছে।
তিনি বলেন, কাফিয়া জামাতের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার বিষয়ে ২০১৮ সালের কাউন্সিলে প্রথম সিদ্ধান্ত আসে। এরপরে এটা পর্যায়ক্রমে আমেলা, শূরা, মজলিসে খাসে উত্থাপন এবং এই জামাতের কেন্দ্রীয় পরীক্ষার নেসাব তৈরি, সবকিছু মিলিয়ে দীর্ঘ আলোচনা পর্যালোচনার পরে আমরা অল্প কয়েকদিন আগে চূড়ান্তভাবে সিদ্ধান্তটা ঘোষণা করেছি। এবং আগামী বছর থেকে এটা কার্যকর করতে যাচ্ছি ইনশাআল্লাহ।
‘এক্ষেত্রে বড় একটা কারণ হলো, আমাদের দশম শ্রেণীর সমমান একটা পরীক্ষা খুব প্রয়োজন ছিল। পুরো পৃথিবীতে যেহেতু এই স্তরটা একটা গুরুত্বপূর্ণ স্তর। সব লাইনেই এই স্তরে একটা কেন্দ্রীয় পরীক্ষা হয়, সেই হিসেবে আমাদের একটা দুর্বলতা ছিল। এটা সকলের পরামর্শের মাধ্যমে আমাদের এই দুর্বলতাটা কাটানোর জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’ -জানান বেফাক মহাসচিব
তিনি উল্লেখ করেন, এছাড়া আমাদের নাহবেমীর এবং শরহে বেকায়া দুই দিকে যে পরীক্ষা; এর মাঝের গ্যাপটা অনেক লম্বা ছিল। আমরা যারা মাদ্রাসা পরিচালনা এবং শিক্ষকতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আমাদের নিজেদের বাস্তব অভিজ্ঞতা যে মাঝখানে একটা পরীক্ষা না হওয়ার কারণে ছাত্রদের লেখাপড়ার মাঝের এই সময়টাতে একটা দুর্বলতা তৈরি হয়। অথচ এই মাঝের সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপর এবং নিচের সেতুবন্ধন হল মাঝখানের এই সময়। যদি মাঝখানটা দুর্বল হয়ে যায় তাহলে আমাদের নিচের লেখাপড়ার মাকসাদ হলো উপরের কুরআন হাদিসকে বুঝা, ভালো করে আত্মস্থ করা। সেখানে মূল জায়গায় আমরা দুর্বল হয়ে যাই। সেই হিসেবে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি আমাদের মাঝখানটাও যেন খুব মজবুত হয়। আমাদের নিচ এবং উপরের মাঝখানের সেতুবন্ধনটা মজবুত হয়ে আমাদের মূল মাকসাদে যেন আমরা সফলতা অর্জন করতে পারি।
মাওলানা মাহফুজুল হক বলেন, সামগ্রিক সব বিবেচনায় সকল মুরব্বিদের পরামর্শে মজলিসে আমেলা, শূরা, কাউন্সিল সব জায়গায় নানাভাবে পরামর্শ ইত্যাদির মধ্য দিয়ে আজকে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। এবং আগামী বছর থেকে এটি কার্যকর করার জন্য আমরা উদ্যোগী হয়েছি। আমি আশা করি, এর মাধ্যমে ছাত্রদের কল্যাণ বয়ে আসবে।
‘ছাত্ররা স্বাভাবিকভাবে একটা নতুন সিদ্ধান্ত আসলে আগ-পিছ না ভেবে একটা কিছু বলে ফেলে। এছাড়া অনেকে হয়তো এ বিষয়টা নিয়ে আগে চিন্তাই করেনি। আমরা আশাবাদী, ওস্তাদদের মাধ্যমে যখন ব্যাপকভাবে ছাত্রদের সামনে এটার ভালো দিকগুলো আলোচিত হবে তখন তারাও এটার সঙ্গে একমত পোষণ করবে এবং তারা এটার ভালোটাকেই কাজে লাগানোর জন্য সচেষ্ট হবে।’ যুক্ত করেন তিনি
সৌজন্যে : ফাতাহ২৪.কম