সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ধর্মীয় অবমাননামূলক পোস্ট দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার রামনাথপুর ইউনিয়নের উত্তর করিমপুর কসবা মাঝিপাড়া গ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ২০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রংপুরের পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার জানিয়েছেন, রামনাথপুর ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের ১৫-১৬ বছরের কিশোরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ ওঠে। এ বিষয়টিকে কেন্দ্র কেন্দ্র করে গতকাল সন্ধ্যার পরপর অসংখ্য লোকজন উত্তেজিত হয়ে ওঠে এবং ওই কিশোরের বাড়িতে আক্রমণের জন্য সমবেত হতে থাকে। এ খবর পাওয়ামাত্রই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) নেতৃত্বে পুলিশ ফোর্স এবং ইউএনও’র নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসনের লোকজন ঘটনাস্থলে আসে।
এসপি আরও বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ফোর্স পাঠাই। পরে ডিসি সাহেব খবর পেয়ে তিনিসহ অন্যান্যরা আসেন। তখন আমরা সবাই মিলে ওই কিশোরের বাড়ির আশপাশের পরিবেশ অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হই। মূল আক্রমণের স্থল, অর্থাৎ ওই কিশোরের বাড়ি আমরা রক্ষা করতে পেরেছি। কিন্তু, পরবর্তী সময়ে আমরা কিছু নাম পেয়েছি, প্রায় ২০ জনের মতো ব্যক্তিকে আটকও করেছি। তারা আশপাশের যে গ্রামগুলো রয়েছে, সেখানে বিনা উসকানিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এ ছাড়া গবাদিপশু লুটপাট করেছে, অগ্নিসংযোগ করেছে, বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে, মন্দিরের প্রতিমাও ভাঙচুর করেছে। এটি ওই কিশোরের বাড়ি থেকে আধা বা এক কিলোমিটার দূরে। এতে বোঝা যায় এটি একেবারেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে করা হয়েছে।’
এ বিষয়ে রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। দোষীদের চিহ্নিত করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
এদিকে, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে আজ সোমবার সকালে খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।