হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসা-যাওয়ার পথে প্রতিনিয়ত হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন প্রবাসীরা। বিশেষ করে মধ্যপ্রচ্যগামী যাত্রীদের ভোগান্তি এখন চরমে। ট্রলি সংকটে মাথায় করে লাগেজ টানতে হচ্ছে তাদের। সঙ্গে মশার উৎপাত বেড়ে যাওয়ায় অতিষ্ঠ সবাই। এ জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা। যাত্রী দুর্ভোগ কমাতে চেষ্টা অব্যাহত আছে বলে জানান বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান।
সরেজমিনে রোববার গিয়ে দেখে বোঝার উপায় নেই এটি কোনো সমাবেশ নাকি বিদেশগামীদের ভিড়। দিন কিংবা রাত, যাত্রীদের এমন জটলা লেগেই আছে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে।
দেশের অন্য বিমানবন্দরগুলো থেকে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে আবার শাহজালালের ট্রাক্সিওয়ের নির্মাণ কাজ চলায় রাত ১২টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ফ্লাইট চলাচল বন্ধ। এ অবস্থায় গেল কয়েক সপ্তাহ ধরে মধ্যপ্রাচ্যগামী যাত্রীর চাপ বাড়ায় ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
এক যাত্রী বলেন, সব কিছুই অগোছালো। তাই আমাদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ট্রলির সংকট ভোগান্তি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। অনেক যাত্রীকে মাথায় ব্যাগ নিয়ে হাঁটতে দেখা যায়।
আরেক নারী যাত্রী বলেন, কোনো ট্রলি পাই নাই। ব্যাগ কাঁধে-মাথায় করে নিয়ে আসছি। এ ছাড়া সন্ধ্যা নামলেই বেড়ে যায় মশার উৎপাত। এ কারণে শিশুদের নিয়ে অপেক্ষমান অভিভাবকদের ক্ষোভটা ছিল চরমে।অপর যাত্রী বলেন, পাখির মতো মশা। এখানে কোনো স্প্রের ব্যবস্থা নেই। একটু স্প্রে করে দিলেই তো মশাগুলো থাকার কথা না।
নির্ধারিত সময়ে বোর্ডিং ও ইমিগ্রেশন শেষ করেও রোববার ইতিহাদ এয়ারের বিকেল সাড়ে ৫টার ফ্লাইট ধরতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েন দুবাইগামী চার যাত্রী।
তাদের একজন বলেন, আমাদেরকে বলা হয়েছে বসেন। এর ২০ মিনিট পর আমাদের বিমান চলে গেছে।
আরেকজন বলেন, আমরা ঋণ করে বিদেশে যাচ্ছি। আমরা এই টাকা কোথায় পাব? যদি আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দেয়?
যাত্রী ভোগান্তি কমাতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট চেষ্টা চলাচ্ছে বলে জানান সংস্থাটির চেয়ারম্যান।
বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোহাম্মদ মফিদুর রহমান বলেন, ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে আমাদের কুয়াশা থাকে। ঘন কুয়াশার কারণে রাতে ফ্লাইট এমনিতেই কম আসে। ওই সময়টা আমরা ব্যবহার করে কাজটা করছি। আমাদের যাত্রীদের জন্য অতিরিক্ত মেডিকেল রিকয়ারমেন্ট থাকার কারণে ২-৩ হাজার অতিরিক্ত লোক এসে বিমানবন্দরে ১০-১২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়েছে।