তীব্র তাপপ্রবাহে সারাদেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। উচ্চ আদালতের এ আদেশে সন্তুষ্ট নন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। হাইকোর্টের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধে এক ধরনের মানসিকতা তৈরি হচ্ছে। সব কিছুতেই কেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর আদালতের নিদের্শনা নিয়ে আসতে হবে? সাংবিধানিকভাবে যাকে যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তা পালন করা বাঞ্ছনীয়। হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে আমরা আপিল বিভাগে যাবো।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান কমপ্লেক্সে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর প্রথম দিনে অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছেন এমন খবর নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, যারা অসুস্থ হয়েছেন, তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাকি অন্যত্র ছিলেন, তা-ও দেখার বিষয়। স্কুল গরমের জন্য বিপজ্জনক, আর মাঠ-ঘাট নয়? যেসব জেলায় তাপমাত্রা কম, সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার তো কোনো কারণ নেই।
এদিন বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এক আদেশে তীব্র গরম ও চলমান তাপপ্রবাহের মধ্যে সারাদেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ এবং মাদরাসার পাঠদান আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন।
এর আগে পবিত্র রমজানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা রাখা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত বাতিল করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
তখন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী বিদ্যালয়গুলোর ছুটি ঘোষণা নির্বাহী এখতিয়ার। কদিন ছুটি থাকবে বা থাকবে না, এটি একটি বিশেষায়িত বিষয়। এটি উচ্চ আদালতের এখতিয়ার নয়। পরে অবশ্য আপিল বিভাগ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের পক্ষেই রায় দেন।
ঈদের ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল সারাদেশে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার কথা ছিল। তবে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে এক সপ্তাহ ছুটি বাড়ানো হয়। এরপর গত ২৫ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে রোববার (২৮ এপ্রিল) থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথারীতি ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী রোববার সারাদেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত গরমে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে অসুস্থ হয়ে পড়ার খবর পাওয়া যায়।