গুনাহ হয়ে গেলে স্বভাবতই মানুষ অনুতাপে ভোগেন, পরবর্তী করণীয় ভেবে দুশ্চিন্তায় পড়ে যান। কেউ আবার আপন পাপাচারেই অটল থাকেন, যা আদৌ কাম্য নয়। কারণ পাপ হয়ে গেলে আবারও সঙ্গে সঙ্গে তওবা করে নেওয়া উচিত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন,
(হে রাসুল আপনি) বলুন, হে আমার বান্দারা! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছো- (তোমরা) আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না; আল্লাহ সব গুনাহ ক্ষমা করে দেবেন। তিনি তো ক্ষমাশীল ও দয়ালু।’ -(সুরা যুমার : আয়াত, ৩৯)
যারা গুনাহের পর তওবা করে এবং তওবার ওপর অটল থাকে তাদের শয়তান নিজের ‘বড় শত্রু’ মনে । শুধু তওবাকারী নয় ১৫ শ্রেণীর মানুষ আছে, যাদের শয়তান নিজের ‘বড় শত্রু’ মনে ।
কারণ আল্লাহ তাআলা অন্যসৃষ্টির ওপর মানুষকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। এটি শয়তান মেনে নিতে পারেনি। মানবসৃষ্টির শুরু থেকে শুরু হওয়া তার শত্রুতা কেয়ামত পর্যন্ত চলবে। সে পৃথিবীতে এসেছে মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য। বিশেষ করে আদমসন্তানের ঈমান ও আমল নিয়ে তার মাথাব্যথা বেশি।
যার ঈমান-আমল বেশি সমৃদ্ধ, তার পেছনে সে বেশি লেগে থাকে। কিছু আমল সে একেবারেই সহ্য করতে পারে না। যদিও ওসব আমলকারীদের ওপর তার কোনো প্রভাব চলে না।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘বিভ্রান্তদের মধ্যে যে তোমার অনুসরণ করবে সে ছাড়া আমার বান্দাদের ওপর তোমার কোনোই ক্ষমতা থাকবে না।’ (সুরা হিজর: ৪২)
ওহাব ইবনে মুনাব্বিহ (রহ.) থেকে বর্ণিত, একবার নবী কারিম (স.) শয়তানকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার দুশমন কারা? শয়তান বলল, ‘১৫ শ্রেণির লোক আমার (সবচেয়ে বড়) দুশমন। ১. সর্বপ্রথম দুশমন হচ্ছেন আপনি। ২. শান্তি ও সত্য প্রতিষ্ঠাকারী শাসক। ৩. বিনয়ী ও দানশীল ধনাঢ্য ব্যক্তি। ৪. সৎ ব্যবসায়ী। ৫. আল্লাহকে ভয় করে চলে—এমন আলেম।
৬. অন্যের জন্য কল্যাণকামী মুমিন ব্যক্তি। ৭. অমায়িক ও সহানুভূতিশীল মুমিন ব্যক্তি। ৮. যে ব্যক্তি তাওবা করে তাওবার ওপর অবিচল থাকে—সে ব্যক্তি। ৯. হারাম থেকে বিরত থাকে এমন ব্যক্তি।
১০. সর্বদা পাকসাফ থাকে এমন মুমিন। ১১. অত্যধিক দান-সদকাকারী। ১২. উত্তম চরিত্রের অধিকারী মুমিন। ১৩. পরোপকারী। ১৪. সর্বক্ষণ তেলাওয়াতকারী হাফেজ বা আলেম। ১৫. গভীর রাতে তাহাজ্জুত নামাজ আদায়কারী। (তাম্বিহুল গাফিলিন, পৃষ্ঠা-৪৭৯)