ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম, শায়খে চরমোনাই বলেছেন, আমাদের পাশের রাষ্ট্র ভারতে মুসলিমদের ওপরে নির্মম নির্যাতন চলছে। ভারত থেকে মুসলিমদের নির্মূল করার অপচেষ্টা চলছে। ওয়াকফ আইন পরিবর্তন করে মুসলমানদের জায়গা জমিন দখল করে নেয়া হচ্ছে। মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর নানাভাবে নির্যাতনের স্টীমরোলার চালানো হচ্ছে। মসজিদ দখল করা হচ্ছে। মাদরাসা দখল করে নেয়া হচ্ছে। এমনকি তাদের কবরস্থানের জায়গাটুকুও মোদী সরকার দখল করে নিচ্ছে।
তিনি মোদী সরকারের উদ্দেশে বলেন, আপনার সামনে ভালো দেখছি না। আপনার ঘাড়ে ভূত চেপে বসেছে। ভারতবর্ষের ইতিহাস আপনি ভুলে গেছেন। কিন্তু মুসলমানরা ভুলে যায়নি। মুসলমানরা জাগ্রত হলে আপনার মসনদ তছনছ হয়ে যাবে।
তিনি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন, জাতিসংঘ, ওআইসিসহ সকল সংস্থাগুলোকে ভারতের নির্মমতার বিরুদ্ধে জাগ্রত হওয়ার আহ্বান জানান।
মুফতি ফয়জুল করীম অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ ইউনুসের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে বলেন, আপনাকে সুখে থাকতে ভূতে কিলায় নাকি? আপনার চারপাশে নাস্তিকদের পদায়ন করেছেন। তারা আপনাকে সুখে থাকতে দেবে না। আমার সতী স্ত্রী, আমার সতী মা, বোন, ফুফু, খালা, চাচীর আইন এরা করবে কেন? এদের ব্যাপারে আমি ভালো ভাষা ব্যবহার করতে চাই না। এ কমিশন পতিতাদের শ্রমিক ঘোষণার প্রস্তাব করার সাহস পায় কীভাবে? নারী কমিশনের প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান এবং কমিশন বাতিল করলেই হবে না্ বরং সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে ফ্যাসিস্ট হাসিনার মতো আপনার উন্নয়নের উপরও জনগণ থুথু নিক্ষেপ করবে। আপনার ওপর আমাদের সাপোর্ট আছে বলে আপনি যাচ্ছেতাই করবেন এটি হতে দেয়া হবে না। বিদেশি কোনো সংস্কৃতি আমাদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করবেন না।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের আগে নির্বাচন নয়। আগে সংস্কার; পরে নির্বাচন। সংস্কারের আগে গুন্ডামি মার্কা নির্বাচন জনগণ সহ্য করবে না। জনতাকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “অচিরেই মার্চ ফর ঢাকা” কর্মসূচি আসছে। আগে সংস্কার পরে নির্বাচন এ দাবিতে আমরা অচিরেই মার্চ ফর ঢাকা কর্মসূচি ঘোষণা করবো। জনতা নির্ধারণ করবে আগে নির্বাচন নাকি আগে সংস্কার?
ইসির সক্ষমতা যাচাইয়ে জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে স্থানীয় নির্বাচন দিতে হবে। এ দাবী এখন অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের। একক কোনো দলকে সরকার বিশেষ কোনো সুবিধা দিলে তা দেশের জনগণ বরদাশত করবে না। বিশেষ কোনো দলকে সুবিধা দেয়ার জন্য ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান হয়নি। হাজারো শহীদের রক্ত আর হাত,পা, চোখ হারানো পঙ্গুত্ববরণকারীদের সাথে বেইমানি করলে পরিণতি শুভ হবে না।
আজ শনিবার বিকাল ৩টায় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত ভারতে ওয়াকফ আইন সংশোধনের নামে মুসলিম নির্মূলের চক্রান্তের প্রতিবাদ এবং ইসলাম ও ধর্মবিদ্বেষী নারী সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবিতে গণমিছিলপূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি উপরোক্ত কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন দলের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, শায়খুল হাদিস আল্লামা মকবুল হোসাইন, মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন সাকী, মাওলানা মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, এডভোকেট হানিফ মিয়া, মুনতাসির আহমাদ, ইঞ্জিনিয়ার মোরাদ হোসেন, হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ মাকসুদুর রহমান, শাহাদাত হোসাইন প্রধানিয়া, হাম্মাদ বিন মোশাররফ, মুহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক, আরিয়ান মুহাম্মদ ইমন প্রমুখ।