সর্বরোগের মহৌষধ কালোজিরা

প্রিয় নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যুগ থেকেই মুসলমানগণ কালোজিরা বিভিন্ন রোগের চিৎিসায় ব্যবহার করে আসছেন।  কালোজিরার বীজ থেকে একধরনের তেল তৈরি হয়, যা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে আছে ফসফেট, আয়রন এবং ফসফরাস। এ ছাড়া কালোজিরা বিভিন্ন রোগের হাত থেকে দেহকে রক্ষা করে। তাই বিস্ময়কর এই জিনিসটির প্রশংসা করে খোদ রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা এই কালোজিরা ব্যবহার করবে। কেননা, এতে মৃত্যু ছাড়া সব রোগের প্রতিষেধক রয়েছে। তিরমিজী- ২০৪৮

এ কারণেই হয়তো সাহাবায়ে কেরাম সব সময় সঙ্গে কালোজিরা রাখার পরামর্শ দিতেন। এ সম্পর্কে রাসুল সা. –এর বাণী-

হযরত ইবনে সা’দ রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন- আমরা (যুদ্ধের উদ্দেশ্যে) বের হলাম। আমাদের সঙ্গে ছিলেন গালিব ইবনে আবযার। তিনি পথে অসুস্থ হয়ে পড়লেন। এরপর আমরা মদীনায় আসলাম তখনও তিনি অসুস্থ ছিলেন। তাকে দেখাশোনা করতে আসেন ইবনে আবী আতীক। তিনি আমাদের বললেন তোমরা এই কালোজিরা সঙ্গে রেখো। এ থেকে পাঁচটি কিংবা সাতটি দানা নিয়ে পিষে ফেলবে, তারপর তন্মধ্যে যায়তুনের কয়েক ফোটা তৈল ঢেলে দিয়ে তার নাকের এ দিক–ওদিকের ছিদ্র পথে ফোটা ফোটা করে ঢ়ুকিয়ে দেবে। কেননা আয়েশা রা. আমাদের নিকট বর্ণনা করেছেন যে, নবী কারীম সা.-কে বলতে শুনেছেন এই কালোজিরা  ‘সাম’ ব্যতিত সকল রোগের ঔষধ। আমি বললাম ‘সাম’ কি জিনিস? তিনি বললেন ‘সাম’ অর্থ মৃত্যু। বুখারী শরীফ- ৫২৮৫

কালোজিরা থেকে প্রকৃত উপকার পেতে হলে অবশ্যই তার ব্যবহার পদ্ধতি জেনে সঠিক ভাবে প্রয়োগ করতে হবে। কখনো কালোজিরার তেল, কখনো পাউডার, কখনো মধু বা অন্যান্য জিনিসের সাথে মিশ্রণ, কখনো ফোটা আকারে ঢেলে, কখনো ব্যান্ডেজ করে এবং ব্যবহারের সঠিক সময় ও নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করে ব্যবহার করতে হবে। এ বিষয়গুলো গবেষণা এবং অভিজ্ঞতার আলোকে বিশেষজ্ঞদের নিকট থেকে জানতে হবে। তাহলে আশা করা যায়, কালোজিরা ব্যবহার করে সকল প্রকার রোগ-ব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। ইচ্ছে মত কালোজিরা ব্যবহার করলেই সকল রোগের ক্ষেত্রে সমান ভাবে সাফল্য নাও পাওয়া যেতে পারে।

সুতরাং এই বিষয়গুলো সর্বদা মাথায় রাখতে হবে। যথার্থ নিয়মে কালোজিরা ব্যবহার না করার ফলে প্রত্যাশিত ফলাফল লাভ না করলে কোনোভাবেই হাদিসের প্রতি কু ধারণা পোষণ করা বৈধ নয়। যদিও ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকরা এ হাদিসের ব্যাপারে নানা অভিযোগ উত্থাপন করে থাকে।

একটি বিষয় মনে রাখতে হবে রোগ থেকে আরোগ্য দান কারী একমাত্র আল্লাহ। ঔষধ-পথ্য কেবল মাধ্যম। সুতরাং আল্লাহ যদি না চান তাহলে কোন ওষুধই কাজ করে না। কারণ আল্লাহ হয়তো বান্দাকে রোগব্যাধি দিয়ে পরীক্ষা করেন অথবা এর মাধ্যমে তার গুনাহ মোচন করেন, আখেরাতে মর্যাদা বৃদ্ধি করেন এবং সেখানে তাকে এর চেয়েও বড় পুরস্কারে ভূষিত করেন যা দুনিয়ার সকল কল্যাণ এর থেকেও অধিক উত্তম। এ মর্মে একাধিক হাদিস বর্ণিত হয়েছে।

বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন নতুন নতুন ভাইরাসের আবির্ভাব হচ্ছে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখনো সেগুলোর প্রতিষেধক বা কোনো ভ্যাকসিন বানানো সম্ভব হয়নি। পবিত্র হাদিসে যেহেতু রাসুল সা. এই জিনিসটি সব রোগের মহৌষধ বলেছেন, তাই এ ধরনের ভাইরাস থেকে বাঁচতে সতর্কতামূলক আমাদের খাবারের মেন্যুতে কালিজিরা যোগ করা যেতে পারে। এতে করে অন্তত রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সুন্নত আদায় হবে।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

ঢাবির বাংলা বিভাগের পরীক্ষায় কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখার নির্দেশ, ধর্মীয় স্বাধীনতার চূড়ান্ত পরিপন্থী : হেফাজত

নূর নিউজ

ইতিকাফের সময় গোসল ফরজ হলে করণীয়

নূর নিউজ

শুধু রমজানের শেষ তিন দিন ইতিকাফ করা যাবে?

নূর নিউজ