সাইবার অপরাধের জড়িয়ে পড়ছে কওমি তরুণেরা, উত্তরণের উপায় কী?

সুফিয়ান ফারাবী

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার কিংবা ইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করেন না এমন মানুষের দেখা পাওয়া বর্তমান সময়ে ভার। কিশোর থেকে তরুণ অথবা বৃদ্ধ সববয়সীই আবদ্ধ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন অ্যাপে।

পরস্পরের যোগাযোগ রক্ষায় বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠা এসব প্রযুক্তি যেমনিভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজ করেছে, তেমনি ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে কিছু কিছু মানুষ বিদ্বেষ বা গুজব প্রচারেও ব্যবহার করছে। এতে সমাজে তৈরি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা।

প্রযুক্তির যুগে এসব ডিজিটাল অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন কলেজ, ইউনিভার্সিটি এবং মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। অপমানজনক বা মানহানিকর লেখালিখি করছেন একে অপরের বিরুদ্ধে।

ভিত্তিহীন তথ্য ও গুজব ছড়িয়ে প্রতিপক্ষকে দুর্বল করার অনন্য হাতিয়ার হয়ে উঠেছে অনলাইন ভিত্তিক এসব অ্যাপ্লিকেশনস।

সম্প্রতি এ ধরনের সাইবার অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও। বিজ্ঞ আলেম, সর্বজন শ্রদ্ধেয় মুরুব্বি অথবা প্রতিষ্ঠ লেখক -সকলই ট্রলের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

বর্তমান সময়ে মাঠে ময়দানে তেমন তৎপরতা না থাকলেও, মাদ্রাসা ভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলোর কতিপয় কর্মী বা সমর্থক একই ধারার অন্য রাজনৈতিক দলের কুৎসা রটাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে আক্রমনাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে নেট দুনিয়ায়। গত কয়েক বছর যাবৎ মাদ্রাসার ছাত্রদের মাঝে এই অপতৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল।

মাওলানা ইয়াহিয়া মাহমুদ মনে করেন, কওমি ছাত্রদের এমন উশৃংখল আচরণের জন্য কতিপয় আলেম দায়ি। তিনি বলেন, ছাত্ররা এসব তাদের শিক্ষকদের কাছ থেকে শিখছে। অনলাইনে ছাত্রদের বেপরোয়া হয়ে উঠার পেছনে মূলত তারাই দায়ী।

“তারা যদি ছাত্রদেরকে শালীনতা শেখাতেন, তাহলে ছাত্ররা এসব বিষয়ে লেখালেখি করার সাহস পেত না। উল্টো তারা শিক্ষকদের দারাই উৎসাহিত হচ্ছে। রাজনীতির সাথে যুক্ত কিছু শিক্ষক তাদেরকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে।” বলছিলেন মাওলানা ইয়াহইয়া মাহমুদ।

এমন সময়ে প্রশ্ন উঠেছে কওমী তরুণেরা অনলাইনে কি লিখবে কি লিখবে না। অথবা অনলাইনে তাদের কার্যক্রম কেমন হওয়া উচিত?

বাংলাদেশ ইসলামী লেখক ফোরামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, দৈনিক সময়ের আলোর বিভাগীয় সম্পাদক আমিন ইকবাল বলেন, ছাত্ররা লেখালেখিতে আরো বেশি সৃজনশীল হবে, এটা আমাদের প্রত্যাশা। কিন্তু বর্তমানে তারা সৃজনশীল লেখা লেখির পরিহার করে ব্যক্তি বা দলের স্বার্থ চরিতার্থ করছে।

” ছাত্ররা শুধু কওমি অঙ্গনের বড় আলেমদের নিয়ে লেখালেখি করছে তা নয়, বরং বিনোদন জগতের নায়ক-নায়িকা অথবা অভিনেতা-অভিনেত্রীদের ফেসবুক প্রোফাইল কিংবা পেজে অশালীন মন্তব্য করছে। একজন মাদ্রাসার ছাত্র কিংবা শিক্ষকের দায়িত্ব এটা নয়। এক্ষেত্রে ছাত্র শিক্ষকদের দায়িত্ব হবে, সঠিক পদ্ধতিতে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। পবিত্র কোরআন আমাদেরকে এমনটাই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোন পাপের সমালোচনা আমরা পাপীদের মতো করতে পারিনা। আমাদেরকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে” যোগ করেন আমিন ইকবাল।

জাতীয় ওলামা মাশায়েখ পরিষদের ঢাকা মহানগরীর যুগ্মসাধারণ সম্পাদক মুফতি ইসমাইল হোসেন সিরাজী মনে করেন, এ ধরনের অপরাধ নির্মূল এর ভূমিকা রাখতে পারেন বিভিন্ন সংগঠনের শীর্ষ ব্যক্তিবর্গ ও শিক্ষা বোর্ডের সর্বোচ্চ অথরিটি আল হাইয়াতুল উলিয়া।

তিনি বলেন, আমাদের কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল রয়েছে। তারা তাদের নেতৃস্থানীয় জায়গা থেকে কর্মীদের সতর্ক করতে পারেন। পাশাপাশি কঠোর থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে করে যারা এধরনের সাইবার অপরাধের যুক্ত, “তারা এ কথা মনে করতে না পারে, অমক রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লেখালেখি করলে নেতৃবৃন্দ আমার প্রতি সুদৃষ্টি রাখবে। এবং দলের ভেতর গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে।

 

এ জাতীয় আরো সংবাদ

পটিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা ওবায়দুল্লাহ হামজার পদত্যাগ!

নূর নিউজ

মহীয়সী নারী রাবেয়া বসরী

নূর নিউজ

হাটহাজারীর শূরা সদস্য মাওলানা হাফেজ সোহাইব নোমানীর ইন্তেকাল

নূর নিউজ