সিজদায় যেভাবে দোয়া করা যাবে না

নামাজের ভেতরের ফজরগুলোর একটি হলো প্রত্যেক রাকাতে দুইটি করে সিজদা দেওয়া। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ! তোমরা রুকূ কর, সেজদা কর আর তোমাদের প্রতিপালকের ইবাদত কর ও সৎকাজ কর যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার। (সূরা হজ, (২২) আয়াত, ৭৭)

নামাজের সিজদায় দোয়া

ফরজ নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সিজদায় গিয়ে কোরআন হাদিসে বর্ণিত দোয়া (তাসবিহ) পড়া সুন্নত। নির্ধারিত দোয়া ও তাসবিহ পড়াই বিধেয়। ইচ্ছামত দোয়া করা ফরজ নামাজে নিষিদ্ধ। সুন্নাহর আলোকে মুজতাহিদগণ যেভাবে নামাজ সাজিয়েছেন, তাতে বাড়তি কিছু করার সুযোগ নেই।

নামাজ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা!

তবে নফল নামাজে বিশেষ করে শেষ রাতের তাহাজ্জুদে হাদিসে বর্ণিত অনেক দোয়া দুরুদ সিজদারত অবস্থায়ও করা যায়। তবে তা কোরআন হাদিস খুব ভালোভাবে বোঝেন এমন বড় আলেম ও মুহাক্কেক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

সাধারণ মানুষের জন্য প্রচলিত পদ্ধতিতেই সীমাবদ্ধ থাকা উচিত। তা না হলে মুস্তাহাব বা জায়েজ আমল করতে গিয়ে তারা নামাজের প্রচলিত নিয়ম ভেঙ্গে ফেলবেন। এতে নামাজ নষ্ট হওয়ারও আশঙ্কা থাকে।

সিজদায় যেভাবে দোয়া করা যাবে না

তবে এরপরও কেউ নফল নামাজের সিজদায় দোয়া করতে চাইলে তাকে অবশ্যই কোরআন-হাদিসে বর্ণিত এমন দোয়া করতে হবে যাতে দুনিয়া আখেরাতের সব ধরনের কল্যাণ রয়েছে, যেমন ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ-দুনিয়া ওয়াল আখিরাহ’।

এর বাইরে বাংলায় কোনও দোয়া করা যাবে না। এবং পৃথিবীতে সাধারণত মানুষের কাছে চাওয়া যায় বা পাওয়া যায় এমন কোনও দোয়াও করা যাবে না। যেমন- হে আল্লাহ আমাকে কাপড় দিন, বিয়ে দিন অথবা এক লক্ষ টাকা দিন- ইত্যাদি।

শরীয়তের বিধান অনুযায়ী নামাজে এভাবে দুনিয়াবি কোনও দোয়া করলে নামাজ ভেঙে যায়। -(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০৫)

নবীজি যা বলেছেন

এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ

নিশ্চয় এই নামাজে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবিহ, তাকবির এবং কোরআন তিলাওয়াতের স্থান। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নং-৫৩৭)

আল্লামা থানবি (রহ.) বলেন, এই হাদিস প্রমাণ করে যে নামাজের ভেতর দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা জায়েজ নেই। সুতরাং দুনিয়াবি দোয়া যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে, তা বলাও জায়েজ নেই।

কোরআন-হাদিসে বর্ণিত দোয়াই গুরুত্ব পাবে

অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার জন্য বান্দার সিজদার আমলটি আল্লাহ তায়ালা কাছে সব থেকে বেশি পছন্দনীয়। তাই বান্দা তাই বান্দা চাইলে যেকোনো সময় আল্লাহর দরবারে সিজদায় লুটিয়ে পরে নিজের কামনা-বাসনাগুলো আপন রবের কাছে উপস্থাপন করতে পারে ।

তবে, নামাজের সিজদায় নিজের কামনা-বাসনা বা দোয়া করার ক্ষেত্রে শুধুমাত্র কোরআন-হাদীসে বর্ণিত দোয়াগুলোই করা যাবে। এর বাইরে অনারবি অন্য কোনও ভাষায় বা দুনিয়াবি এবং মানুষের কাছে চাওয়া যায় এমন কোনও দোয়া করা যাবে না। (ইলাউস সুনান, ৩/১৭২, ফাতহুল বারি, ২/২২২)

এ জাতীয় আরো সংবাদ

এসো লেখা সুন্দর করি খাতা’র মোড়ক উন্মোচন

নূর নিউজ

রমজানের শিক্ষা পুরো বছর কাজে লাগানোর উপায়

নূর নিউজ

একসঙ্গে অনেককে সালাম দিলে উত্তর দেবেন কে?

নূর নিউজ