পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলীয় প্রতীক ক্রিকেট ব্যাট নিয়েই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে।
রোববার খাইবার পাখতুন খাওয়ার রাজধানী পেশোয়ারে হাইকোর্ট এক রায়ে এই আদেশ দিয়েছেন।
আদালতের এই রায় পিটিআই ও দলটির কারাবন্দি প্রধান ইমরান খানের আরেকটি আইনি বিজয়।
গত সপ্তাহে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন এক আদেশে বলেছিল, পিটিআই নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে ক্রিকেট ব্যাট ব্যবহার করতে পারবে না। কিন্তু মঙ্গলবারের রায়ে পেশোয়ার হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের সেই আদেশ রদ করে দিয়েছেন।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় পিটিআইয়ের আইনজীবী সৈয়দ আলী জাফর বলেছেন, ‘পিটিআইয়ের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন অবৈধ আদেশ দিয়ে অন্যায়ভাবে দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘ক্রিকেট ব্যাটকে’ বাতিল করেছিল। নির্বাচন কমিশনের সেই রায় রদ করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রতীক পুনর্বহাল করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।’
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, পাকিস্তান এমন একটি দেশ, যেখানে প্রাপ্তবয়স্কের সাক্ষরতার হার মাত্র ৫৮ শতাংশ। ফলে নির্বাচনের সময় ব্যালট পেপারে বিভিন্ন দলের নির্দিষ্ট দলীয় প্রতীক দেখেই প্রার্থীদের পার্থক্য করতে স্বচ্ছন্দ বোধ করেন ভোটাররা।
নির্বাচন কমিশনের দাবি, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়া পিটিআই প্রতীক নির্ধারণে ব্যর্থ হওয়ায় তারা এই পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু পিটিআইয়ের অভিযোগ, এই পদক্ষেপ মূলত ইমরান খানকে আটকাতেই নেওয়া হয়েছিল, যাতে তিনি ৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন।
ইমরান খান পাকিস্তানে ব্যাপক জনপ্রিয়। কিন্তু ২০২২ সালের এপ্রিলে পাকিস্তানের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর আনুকূল্য থেকে বাদ পড়ায় তাকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
এর পর তার বিরুদ্ধে প্রায় ২০০ মামলা দায়ের করা হয়। তারই একটি মামলায় বর্তমানে তিনি কারাগারে বন্দী। চলতি বছরের শুরুর দিকে ইমরান খানকে গ্রেফতারের পর পাকিস্তান সরকার পিটিআইয়ের ওপর প্রবল দমন-পীড়ন শুরু করে। দলের অনেক নেতাকে জেলে পাঠানো হয়েছে কিংবা সেনাবাহিনীর চাপের মুখে দল ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার পিটিআই জানিয়েছিল, আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ইমরান খান। সেই লক্ষ্যে তার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া হয়েছে। তবে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় তার মনোনয়ন চ্যালেঞ্জ করা হতে পারে।