আল্লাহ তায়ালা নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আসমান ও জমিনের জ্ঞান দেওয়ার পর দুটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং একটি দোয়া পড়ার নির্দেশনা দেন। বিষয় দুটি ইবাদত ও আমল সম্পর্কিত। মুমিন মুসলমানের জন্যও খুব গুরুত্বপূর্ণ এবং মর্যাদার।
‘কাফফারাত ও দারাজাত’ ইবাদাতের দুইটি বিশেষ পরিভাষা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুইটি ইবাদত সম্পর্কেই উম্মতে মুহাম্মাদিকে জানিয়েছেন। এই ইবাদত ও দোয়ায় সহজেই আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করা সম্ভব। গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও দোয়া সম্পর্কে হাদিসে এসেছে-
হজরত আবদুর রহমান ইবনু আয়িশ ইবনু আব্বাস ও মুয়াজ ইবনু জাবাল রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন- হে মুহাম্মাদ! আপনি কি জানেন ‘মালা-উল আলা’ কী বিষয়ে তর্ক করছে?
নবিজী বললেন, ‘হ্যাঁ’, আমি জানি! ‘কাফফারাত’ নিয়ে বিতর্ক করছে। ‘কাফফারাত’ হলো-
১. মসজিদে নামাজের পর আরেক নামাজের ওয়াক্ত আসা পর্যন্ত অপেক্ষা বা জিকির-আজকার করার জন্য বসে থাকা।
২. জামাতে নামাজ আদায় করার জন্য পায়ে হেঁটে (মসজিদে) চলে যাওয়া।
৩. কঠিন সময়ে (অসুস্থাবস্থায় বা প্রচণ্ড শীতের সময়) অজুর স্থানে (অঙ্গসমূহে) ভালোভাবে পানি পৌঁছানো।
যারা এভাবে উল্লিখিত আমলগুলো করলো; তারা কল্যাণের উপর বেঁচে থাকবে, কল্যাণের উপর মৃত্যুবরণ করবে। আর তার গুনাহসমূহ থেকে এমনভাবে পূত-পবিত্র হয়ে যাবে, যেন আজই তার মা তাকে প্রসব করেছে।
আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে মুহাম্মাদ! নামাজ আদায় করার পর এ দোয়া পড়ে নেবেন-
اللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ فِعْلَ الْخَيْرَاتِ وَتَرْكَ الْمُنْكَرَاتِ وَحُبَّ الْمَسَاكِينِ وَإِذَا أَرَدْتَ بِعِبَادِكَ فِتْنَةً فَاقْبِضْنِي إِلَيْكَ غَيْرَ مَفْتُونٍ
উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা ফি’লাল খায়রাতি ওয়া তারকাল মুনকারাতি ওয়া হুববাল মাসাকিনি ওয়া ইজা আরাদতা বি-ইবাদিকা ফিতনাতান ফাক্ববিদ্বনি ইলাইকা গাইরা মাফতুন।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে ভালো কাজ করার তাওফিক চাই। খারাপ কাজ থেকে বিরত থাকার শক্তি চাই। গরিব-মিসমিনদের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনের সুযোগ চাই। আর যখন তুমি বান্দাদের মধ্যে পথভ্রষ্টতার এবং ফেতনা-ফাসাদ সৃষ্টি করার ইচ্ছা করবে তখন আমাকে ফেতনামুক্ত রেখেই তোমার কাছে উঠিয়ে নেবে।’
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বললেন, ‘দারাজাত’। ‘দারাজাত’ হলো-
১. সালামের প্রসার করা,
২. গরিবকে খাবার দেওয়া,
৩. রাতে মানুষ যখন ঘুমে থাকে তখন নামাজ আদায় করা।’ (তিরমিজি, মিশকাত)
হাদিসের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাফফারাত ও দারাজাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত ও আমল। উল্লেখিত আমল-ইবাদতের পর আল্লাহ তাআলা উল্লেখিত দোয়াটি পড়তে বলেছেন।
সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী ‘কাফফারাত ও দারাজাত’ নির্দেশিত আমল-ইবাদত করা এবং উল্লেখিত দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা।
আল্লাহ তায়ালা আমাদের আমল করার তাওফিক দান করুন।