আন্তর্জাতিক ৩টি কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন বাংলাদেশের হাফেজ তানভীর হোসাইন।
মিশরে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ তানভীর হোসাইন তৃতীয় হওয়ার সংবাদ গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর, তাকে নিজের একটি চোখ উপহার দিতে চেয়েছেন কিশোরগঞ্জের বাসিন্দা মোহাম্মদ আসাদুল হাসান (৫২)।
আসাদুল সম্প্রতি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘হাফেজ তানভীর আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম ও তৃতীয় স্থান অর্জন করায় আমি তাকে আমার একটি চোখ উপহার দিতে চাই। প্লিজ কেউ উনার সাথে আমাকে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে পারবেন?’
আসাদুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি মরণোত্তর চোখ দান করার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম। এখন সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হাফেজ তানভীর হোসাইনকে আমার একটি চোখ উপহার দেব।’
হাফেজ তানভীর হোসাইনের শিক্ষক শাইখ ক্বারী নেসার-আন-নাসিরী বলেন, ‘বিশ্বজয়ী হাফেজ তানভীর জন্মান্ধ। আসাদুল হাসানের উপহার দেওয়া চোখে আমার ছাত্র তানভীর হোসাইন পৃথিবীর আলো দেখতে পারবে জেনে ভালো লাগছে।’
গতকাল সন্ধ্যায় আসাদুল হাসান আবারও লাইভে এসে তার এ ইচ্ছার কথা জানিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে লাইভটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।
কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার নারান্দী ইউনিয়নের সনমানিয়া গ্রামের বাসিন্দা আসাদুল হাসান একজন স্বেচ্ছাসেবী রক্তদাতা। জেলার স্বেচ্ছাসেবীদের কাছে তিনি ‘নানা ভাই’ নামে পরিচিত। ইতোমধ্যে তিনি নিজে ৭৩ বার রক্তদান করেছেন।
হাফেজ তানভীর হোসাইনকে চক্ষুদানের এমন ঘোষণা দেওয়ায় মোহাম্মদ আসাদুল হাসানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার স্বেচ্ছাসেবী বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি।
উল্লেখ্য, ২৭ বছর বয়সী জন্মান্ধ হাফেজ তানভীর হোসেন কিছুদিন আগে বিশ্বের ৫৮টি মুসলিম দেশের প্রতিযোগীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মিশরে আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় তৃতীয় স্থান অর্জন করেন।
এর আগে হাফেজ তানভীর বাংলাদেশ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। তানভীর এর আগে সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করেছিলেন।
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরকাকড়া গ্রামের তানভীর হোসাইন ঢাকার যাত্রাবাড়ী দনিয়া কাজলাস্থ শায়েখ নেছার আহমাদ আনছারী পরিচালিত যাত্রাবাড়ী মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল মাদ্রাসার ছাত্র।
Source: The Daily Star