মুসলিম বিশ্ব: টানা ১১ দিন যুদ্ধের পর হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ায় ঘর-বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে ‘বিজয়োল্লাস’ করছেন ফিলিস্তিনিরা। আজ শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ২টায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর রাতের কিছু আগে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর দলে দলে রাস্তায় নেমে আসেন ফিলিস্তিনিরা। যুদ্ধবিরতীকে নিজেদের বিজয় হিসেবে উল্লেখ করে এসময় উল্লাসে মেতে ওঠেন তারা। এসময় ফাঁকা গুলিবর্ষণ এবং আতশবাজির শব্দের মাধ্যমে বিজয় উদযাপন করেন ফিলিস্তিনিরা।
আলজাজিরার সংবাদদাতা সাফওয়াত আল-কাহলৌত জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নিঃশর্তভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়াকে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন দল নিজেদের বিজয় হিসেবে বর্ণনা করেছেন এবং বিজয় উদযাপনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন মসজিদের লাউডস্পিকারের মাধ্যমে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছেন তারা।
এদিকে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিঃশর্তভাবে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়াকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের বিজয় বলে দাবি করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। শুক্রবার ভোরে গাজা শহরে উল্লাসরত মানুষের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে জয়লাভের ঘোষণা দেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সিনিয়র নেতা খলিল আল-হায়্যা।
উদযাপনরত মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এটা বিজয়ের আনন্দ, বিজয়ের উচ্ছ্বাস।’ এ ছাড়া ইসরায়েলের বিমান হামলায় ধ্বংস ও ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি ও বিভিন্ন ভবন পুন:নির্মাণের ঘোষণাও দেন হামাস নেতা খলিল আল-হায়্যা।
এর আগে মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইহুদি দেশ ইসরায়েল। টানা ১১ দিন গাজায় সহিংসতা চালানোর পর ইহুদি রাষ্ট্রটির জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়। ফিলিস্তিনের সশস্ত্র দল, গাজা, হামাস এবং ইসলামিক জিহাদও যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় বলে বিবিসির খবরে বলা হয়।
ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মিশরের প্রস্তাবে আমরা যুদ্ধবিরতিতে সম্মত। এই যুদ্ধবিরতি হবে পারিস্পরিক ও নিঃশর্ত।
উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের পর এটাই ছিল দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ। গাজায় সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৫ শিশু এবং ৩৬ নারী রয়েছেন। অপরদিকে হামাসের হামলায় ১২ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছেন।