১৭২ দিন পর অনশন ভাঙলেন আলোচিত বন্দি ফিলিস্তিনি খলিল আওয়াদেহ। কোনো অভিযোগ বা বিচার ছাড়া আটকে রাখার প্রতিবাদে গত মার্চ থেকে অনশন কর্মসূচি পালন করছিলেন তিনি।
বুধবার মুক্তির খবর নিশ্চিতের পর খাবার মুখে তোলেন তিনি। ২ অক্টোবর বন্দিদশা থেকে মুক্ত হওয়ার কথা তার। খলিলের মুক্তিকে বিজয় হিসেবে দেখছেন ফিলিস্তিনিরা।
প্রায় ছয় মাসের অনশনে ৪০ বছর বয়সি খলিল আওয়াদেহর ওজন কমে দাঁড়িয়েছে ৩৭ কেজিতে। যে কোনো সময় মৃত্যু হতে পারে, এমন শঙ্কাও জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। এর পরও অবিচল ছিলেন নিজ সিদ্ধান্তে। ইসরাইলের অন্যায়ের বিরুদ্ধে চালিয়ে গেছেন নীরব প্রতিবাদ।
গত ডিসেম্বরে আরও অনেক ফিলিস্তিনির মতোই বিনাঅভিযোগে আটক করা হয় খলিল আওয়াদেহকে। ইসরাইল এ বিচারবহির্ভূত ধরপাকড়ের নাম দিয়েছে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ডিটেনশন বা প্রশাসনিক আটকাদেশ। আদালতে না তুলে দিনের পর দিন কারাগারে আটকে রাখা হয় এমন বন্দিদের। বিভিন্ন কারাগারে এমন ফিলিস্তিনি বন্দির সংখ্যা প্রায় ৭০০। যার প্রতিবাদ জানাতেই গত মার্চে আরও কয়েকজন বন্দির সঙ্গে অনশন শুরু করেন খলিল।
অনশন শেষে খলিল বলেন, শরীরের অবস্থা খুব খারাপ। ভেতরে মনে হয় শেষ হয়ে গেছি। তবে আল্লাহর ওপর ভরসা করে সাহস রেখেছি, যা আমাকে প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে।
গত মাসেও এক দফা তার মুক্তির আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল ইসরাইলি আদালত। এতে নিন্দা-সমালোচনার ঝড় উঠলে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেন ফিলিস্তিনিরা, চাপ দেয় মধ্যস্থতাকারী মিসরও। অবশেষে আইনজীবীরা জানালেন তার মুক্তি নিশ্চিতের খবর। তবে ২ অক্টোবর মুক্তি পেলেও সুস্থ হওয়া পর্যন্ত হাসপাতালেই থাকতে হবে তাকে।
শারীরিকভাবে চরম দুর্বল হলেও মনোবল চাঙ্গা খলিলের। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া ভিডিওবার্তায় নিজের মুক্তির আনন্দকে ভাগ করে নেন ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে। সেখানে তিনি বলেন, আল্লাহর অশেষ দয়ায় মুক্তির খবর পেলাম। অক্টোবরের ২ তারিখ ছাড়া পাব। উঠে দাঁড়ানোর শক্তি যতদিন না পাব, ততদিন হাসপাতালে থাকতে হবে। আমার মুক্তির ঘোষণা এলে ফিলিস্তিনি জনগণের অর্জন। যারা আমার পাশে ছিলেন, তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
খলিল আওয়াদের মুক্তির ঘোষণায় আনন্দিত ফিলিস্তিনিরা। একে বিজয় হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠন ইসলামিক জিহাদ। তবে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলেনি তেলআবিব।
সূত্র: মিডল ইস্ট মনিটর, আলজাজিরা।