আল্লামা আহমদ শফীর (রহ.) বিস্তৃত কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নে যে কজন মানুষ নিবেদিত হয়ে কাজ করেছিলেন আল্লামা আবুল কাসেম ভূঁইয়া (রহ.) ছিলেন তাদের অন্যতম। শাইখের নির্দেশে ফেনী জেলায় যাবতীয় দ্বীনি দায়িত্ব তিনি পালন করেছিলেন। আল্লামা আবুল কাসেম ভূঁইয়া (রহ.) ছিলেন আল্লামা আহমদ শফীর (রহ.) প্রতিবিম্ব। তিনি মূলত আল্লামা আহমদ শফীর (রহ.) মিশন বাস্তবায়নেই কাজ করে গেছেন আজীবন।
বৃহস্পতিবার ফেনী জেলার সর্বস্তরের আলেম-উলামাদের অংশগ্রহনে পদুয়া কাসেমুল উলুম মাদরাসা প্রাঙ্গণে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।
এদিন বিকাল তিনটা থেকে হেফাজতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আমীর ও হাটহাজারী মাদরাসার মোহতামিম শাইখুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) ও ফেনী জেলা হেফাজতে ইসলামের সাবেক আমীর, জহিরিয়া মসজিদের খতিব এবং পদুয়া কাসেমুল উলুম মাদরাসার মোহতামিম আল্লামা আবুল কাসেম ভুঁইয়া (রহ.) এর জীবনকর্ম শীর্ষক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এতে ফেনী জামেয়া রশীদিয়া মাদ্রাসার মুহতামিম আল্লামা মুফতী শহীদুল্লাহ, ফেনী জামেয়া মাদানীয়ার মুহতামিম মুফতি সাইফুদ্দীন, ওলামাবাজার মাদ্রাসার সিনিয়র মুহাদ্দিস মুফতি শিব্বীর আহমদ, নূরপুর মুহিউসসুন্নাহ মাদ্রাসার শাইখুল হাদিস মাওলানা আবদুর রাজ্জাকসহ ফেনী জেলার শীর্ষ আলেমরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে আল্লামা আহমদ শফী (রহ.) ও আল্লামা আবুল কাসেম ভূঁইয়া (রহ.) এর শুভানুধ্যায়ী শীর্ষ আলেমরাও অংশ নেন। এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন আল্লামা আবুল কাসেম ভূঁইয়ার (রহ.) ছেলে ও পদুয়া কাসেমুল উলুম মাদরাসার মুহতামিম ড. মাওলানা কামরুল ইসলাম ভুঁইয়া।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বিগত দুই বছরে আমরা হারিয়েছি নক্ষত্রতুল্য অনেক আলেম। আমাদের মাথার ওপর থেকে সরে গেছে তাদের ছায়া। হুট করে আমাদের সামনে নিভে গেছে তাদের আলোকবর্তিকা। তাই পরিলক্ষিত হচ্ছে ঘনায়মান আঁধার। শূন্যতা অনুভব হচ্ছে চারদিকে। সঙ্কটে আমাদেরকে সুস্থির রাখার মতো অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছি আমরা। যাদের হারিয়েছি, তাদের মধ্যে অন্যতম দুজন হলেন শাইখুল ইসলাম আল্লামা আহমদ শফী এবং আল্লামা আবুল কাসেম ভূঁইয়া (রহ.)। তারা দুজন ছিলেন উসতাদ-শাগরিদ।
লিখিত বক্তব্যে ড. মাওলানা কামরুল ইসলাম ভুঁইয়া বলেন, আল্লামা আহমদ শফীর (রহ.) সঙ্গে আল্লামা আবুল কাসেম ভূঁইয়ার (রহ.) পীর-মুরিদের সম্পর্কের চেয়েও পারিবারিক সম্পর্ক ছিলো বেশি। আল্লামা শাহ আহমদ শফী (রহ.) বলতেন, আমার তিন ছেলে- ইউসুফ, আনাস , কাসেম। সর্বশেষ যখন তিনি ভারতের অ্যাপোলো হসপিটালে চিকিৎসা নিতে যান, তখন মাওলানা আসজাদ মাদানী তাকে জিজ্ঞেস করেন, আপনার ছেলে কয়জন। তিনি বলেন, তিনজন। ইউসুফ, আনাস, কাসেম। তখন উপস্থিত সবাই বিস্মিত হয়।
দোয়া মাহফিলে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাইনুদ্দীন রুহি, আঞ্জুমানে দাওয়াতে ইসলাহ’র সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতী নাসির উদ্দিন কাসেমী, নাজিরহাট জামিয়া ফারুকিয়ার মোহতামিম মাওলানা সলিমুল্লাহ, মাওলানা শামসুদ্দিন আফতাব মাওলানা আসআদ মাদানী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।