প্রবাসী ডেস্ক: যুদ্ধবিধস্ত ইরাকেও বাংলাদেশ থেকে হচ্ছে নারীপাচার। দেশটিতে নির্যাতনে অসুস্থ এক নারী দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন।
ফিরতে চাইলে ২ হাজার ডলার মুক্তিপণ দাবি করেছেন সে দেশে তার গৃহকর্তা। এ ঘটনায় রিক্রুটিং এজেন্সিসহ মানবপাচারে জড়িত কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার।
পর্যটক ভিসায় ইরাকে পাচার করা হয়েছিল বাংলাদেশি দুজন নারীকে। তাদেরকে সেদেশে বাসাবাড়ীর কাজে নিযুক্ত করা হলে একজন বাড়ি ছেড়ে পালাতে সক্ষম হন। অপরজন শারিরীক নির্যাতনে অসুস্থ পড়েছেন।
ইরাকে মানব পাচারের শিকার ভুক্তভোগী বাংলাদেশি নারি কর্মী ফাতেমা আখতার বলেন, আমাকে চুরি করে ফোনে কথা বলতে হয়। তারা যদি জানে আমি কারো সাথে ফোনে কথা বলছি তাহলে আমাকে নির্যাতন করে। আমাকে এক মাসের বেতন দিছে, কিন্তু আর কোন বেতন দেয় নাই।
ওই নারীকে ইরাকে পাচারে যুক্ত ছিলেন তারই ভগ্নিপতি রুহুল আমিন মুন্নু। তিনি রিক্রুটিং এজেন্সি আল নাহিন ম্যানপাওয়ার সার্ভিসেস লিমিটেডের দালাল হিসেবে কাজ করতেন। ওই এজেন্সি ও মুন্নুর বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলাও হয়েছে। বর্তমানে রিক্রুটিং এজেন্সির মালিক মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা কারাবন্দি, তবে মুন্নু পলাতক।
ভুক্তভোগি নারীর ভাই শাকিল হোসেন বলেন, তাকে যখন পাঠান হয়েছে আমাদেরকে বলেছে যে কোন ভিসায় সে যাচ্ছে বা তার মেয়াদ কতটুকু এগুলো কোন বিষয়ই না। সে যাবে আমাদের উপর ভর করে। পরে আমরা ইরাকের মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে সে বলে তাকে দুই হাজার ডলারে সে কিনে নিয়েছে। এখন সে দেশে ফিরতে চাইলে তাকে দুই হাজার ডলার দিতে হবে।
ভুক্তভোগি নারীর মালয়েশিয়া প্রবাসী স্বামী বলেন, তাকে সেখানে অনেক নির্যাতন করা হয়। কিছু হলেই তাকে মারধর করে। আমরা তাদের অনেক অনুরোধ করে বলেছি যে আমরা যে টাকা-পয়সা দিয়েছি সেগুলো আমাদের দিতে হবে না শুধু তাকে দেশে ফিরায়া দেন। কিন্তু তারা কোন কিছুই করছে না।
এ ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলতে না চাইলেও বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত আছে বলে জানিয়েছে ইরাকের বাংলাদেশ দূতাবাস।
ইরাকে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার কাউন্সিলর রেজাউল কবীর বলেন, আমরা এই বিষয়টি জানি। কিন্তু এই বিষয় নিয়ে আমরা কোন মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি লাগে। অনুমতি ছাড়া এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব না।
পাচার হওয়া অসুস্থ ওই নারীকে দেশে ফিরিয়ে ফেরত আনতে সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন তার সন্তান ও স্বজনরা।