আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণি পদত্যাগ করতেই, দেশের দখল নিয়েই তালেবান এক মুখপাত্রের কণ্ঠে কি পাশ্চাত্যের সুর? মুখপাত্র বলেন, আফগান নারীদের কাজে ও শিক্ষায় পুরুষদের সমানাধিকার দেয়া হবে। শুধু হিজাব পরাটা তাদের জন্য হবে বাধ্যতামূলক। এ কোন তালেবান? ১৯৯৬ থেকে ২০০১ – তাদের শাসনকালেই না আইন করা হয়েছিল মেয়েরা চাকরিতে যেতে পারবে না! ডাক্তারি ছাড়া কোনো উচ্চশিক্ষাই তারা নিতে পারবে না। এমনকি মেয়েদের চিকিৎসা করার পথেও তালেবানরা কিছু বিধি-নিষেধ জারি করেছিল। তারা জাতিসংঘের চার্টার অমান্য করে এক লক্ষ ষাট হাজার আফগানকে খাদ্য থেকে বঞ্চিত করেছিল। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসায় আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল। দেওবন্দী মৌলবাদের অনুসারী হয়ে শরিয়া প্রবর্তন করেছিল আফগানিস্তানে। একচক্ষু শাসক মোল্লা মোহাম্মদ ওমর অত্যাচারের রথ চালিয়ে দিয়েছিলেন আফগান জনগণের ওপর।
অথচ তারা নাকি তালেব অর্থাৎ শিক্ষার্থী। দক্ষিণ এবং পূর্বের পশতুনদের নিয়ে গড়া তালেবানদের আত্মপ্রকাশ ১৯৯৪ সালে। আফগানদের মনের ক্ষোভের আগুনে বাতাস দেয় তালেবানরা। মোল্লা ওমরের নেতৃত্বে সরকার গড়ে তালেবান, পরাস্ত করে রুশ সেনাদের। তাদের কঠোর মৌলবাদে অতিষ্ঠ আফগানরা মার্কিন সেনার সাহায়তায় আফগানিস্তান পুনরুদ্ধার করে। আফগানিস্তানে যতোদিন মার্কিন সেনা ও ন্যাটোবাহিনী ছিল মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি তালেবানরা। আমেরিকা তাদের সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করার পর এই বছর থেকেই তালেবানরা আবার সঙ্গবদ্ধ হয়। বাগরাম বিমানঘাটি তারা রোববার দুপুরে দখল করার পরই আফগান প্রেসিডেন্ট পদত্যাগ করে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। ১৯৯৬ – ২০০১ পর্যন্ত পাকিস্তান, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ছাড়া অন্য কোনো দেশ তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এবার কি হবে? পাকিস্তান তাদের স্ট্র্যাটেজিক কারণে তালেবানের সমর্থক। কিন্তু মুখে তারা নিরপেক্ষ থাকার কথা বলে। এবার কি হয় সেটা কিছুক্ষণের মধ্যে বোঝা যাবে। পশতুনরা পাহাড়ি যোদ্ধার জাত। আবেগ অথবা কোমল অনুভূতি তাদের অজানা। রাতারাতি তারা কি বদলে যাবে? কোটি টাকা, ডলার কিংবা ইউরোর প্রশ্ন।