ইসি গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা রাষ্ট্রপতির

নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা কামনা করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।সোমবার বঙ্গভবনে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন এবং খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপে এ সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

এদিন বিকাল ৪টায় প্রথমে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দল বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। সন্ধ্যা ৬টায় বৈঠক করেন খেলাফত মজলিসের সঙ্গে।

বঙ্গভবনে দুই দলকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনই এ আলোচনার মূল লক্ষ্য।

রাষ্ট্রপতি বলেন, পর্যায়ক্রমে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে।

এর আগে পৌনে ৪টার দিকে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর নেতৃত্বে দলটির ৭ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিতে বঙ্গভবনে প্রবেশ করেন।

আলোচনায় অংশ নিয়ে তরিকত ফেডারেশনের প্রতিনিধি দল একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দেন।

তারা বলেন, নির্বাচন কমিশন গঠনে আইন প্রণয়ন এখন সময়ের দাবি। এছাড়াও দলটি আইন প্রণয়নের অনুপস্থিতিতে সার্চ কমিটি গঠন, রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি সুশীল সমাজের সঙ্গে মতবিনিময় এবং নির্বাচন কমিশনে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী ও তাদের পরিবারের কাউকে নিয়োগ না দেওয়ারও প্রস্তাব করেন।

এ সময় দলটির মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরী, সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ হাবিবুল বশর মাইজভান্ডারী, প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ কামাল নুরী আল-সুরেশ্বরী, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. সৈয়দ আবু-দাউদ মসনবী হায়দার, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ তৈয়বুল বশর, যুগ্ম মহাসচিব ও মুখপাত্র মুহাম্মদ আলী ফারুকী উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নিয়ে ইসি গঠনে আইনসহ নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানিয়েছে খেলাফত মজলিস।

দলটির মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে আট সদস্যের প্রতিনিধি দল এতে অংশ নেন।
সংলাপে অন্যদের মধ্যে ছিলেন-দলটির জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মাওলানা যোবায়ের আহমদ চৌধুরী, নায়েবে আমির মাওলানা এসএম সাখাওয়াত হোসাইন, নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট মো. জাহাঙ্গীর হোসাইন, মুহাম্মদ মুনতাসির আলী, ড. মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সল এবং অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল জলিল।

নির্বাচন কমিশন গঠনে ২০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করেন রাষ্ট্র্রপতি। এরপর তিনি একে একে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল- জাসদ, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- ন্যাপের সঙ্গে বৈঠক করেন।

আমন্ত্রণ থাকলেও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ এই সংলাপে অংশ নেয়নি। মঙ্গলবার বিকাল ৪টায় বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, ২৯ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এবং একই দিন সন্ধ্যা ৬টায় ইসলামী ঐক্যজোট রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপে অংশ নেবে।
এছাড়া ২ জানুয়ারি গণফোরাম ও বিকল্প ধারা এবং ৩ জানুয়ারি গণতান্ত্রিক পার্টি ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সংলাপে অংশ নেওয়ার দিনক্ষণ ঠিক করা আছে। সিপিবি অবশ্য সংলাপে অংশ না নেওয়ার কথা ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে।

আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। সংবিধানে ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের কথা উলে­খ আছে। তবে এ সংক্রান্ত আইন দেশে হয়নি। এ পরিস্থিতিতে গত দুই মেয়াদে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে সার্চ কমিটি গঠন করেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ।

ওই কমিটি সম্ভাব্য ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করার পর রাষ্ট্রপতি সেখান থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য কমিশনারদের নিয়োগ দেন। এবার সংবিধান অনুযায়ী আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে আসছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। যদিও রাষ্ট্রপতি আগের পথেই হাঁটছেন।

বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন এবং খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও সংলাপ চলাকালে আরও উপস্থিত ছিলেন-রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ুয়া, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম সালাহ উদ্দিন ইসলাম, রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন, সচিব (সংযুক্ত) মো. ওয়াহিদুল ইসলাম খান।

এ জাতীয় আরো সংবাদ

জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় আ.লীগ : কাদের

নূর নিউজ

ওআইসি সম্মেলনে তালিবান সম্পর্কে যা বলল বাংলাদেশ

নূর নিউজ

তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের: ভয় পাবেন না, প্রস্তুত হোন

নূর নিউজ